ভারত থেকে আসা প্রবল ঢল এবং টানা বৃষ্টির কারণে ফেনী জেলায় চার লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। জেলার ছয়টির মধ্যে সদরসহ চারটি উপজেলা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেনীর বেশিরভাগ এলাকা দুই দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবাও নেই।
ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া এবং সদর উপজেলার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। অনেক এলাকায় মানুষ আটকে পড়েছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশের অনেক জায়গা পানিতে তলিয়ে গেছে, কোথাও কোথাও কোমর সমান পানি দেখা গেছে। ফলে ওই সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, জেলা সদর ও তিনটি উপজেলা বন্যাকবলিত। এছাড়া দাগনভূইয়া ও সোনাগাজী উপজেলা আংশিকভাবে বন্যায় আক্রান্ত। মোট চার লাখেরও বেশি মানুষ এই পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন, এবং এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই।
বন্যাকবলিত তিনটি উপজেলা এবং অন্যান্য এলাকা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে বিশুদ্ধ পানি ও রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পানি স্থিতিশীল রয়েছে, তবে জেলা সদর এলাকায় পানির উচ্চতা বাড়ছে। ফেনী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াইপুর এলাকার বাসিন্দা জহিরুল হক জানিয়েছেন, তার এলাকায় তিন ফুট উচ্চতার পানি উঠেছে এবং শহরের বেশিরভাগ এলাকায় দুই দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই।
উদ্ধার কাজ চলমান থাকলেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। যদিও ফেনীতে ১২ ঘণ্টা ধরে বৃষ্টিপাত হয়নি, তবুও সদর এলাকায় পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে শহরের হাসপাতাল ও প্রশাসনিক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে।
ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, সব জায়গা পানিতে ডুবে গেছে। গ্রাম থেকে গ্রাম, মাঠ থেকে মাঠ সবই পানিতে তলিয়ে গেছে। যাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে তারা আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র, স্থানীয় মসজিদ এবং মন্দিরে। বিভিন্ন স্কুলে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, যারা খাবার পানি ও শুকনো খাবারের সংকটে ভুগছেন।