বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে প্রতারণা এবং নিরাপত্তাহীনতা দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, যা ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের আস্থার সংকট তৈরি করেছে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেম আনার উদ্যোগ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে কয়েকটি পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটর এই সেবাটি কার্যকর করার জন্য কাজ করছে। যেমন, পেটাকা (PAYTK) এ এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেমটি চালু করেছে, যা প্রতারণা রোধে কার্যকর হতে পারে এবং গ্রাহক সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কীভাবে কাজ করে এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেম?
এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেমে ক্রেতার অর্থ সরাসরি বিক্রেতার হাতে না গিয়ে প্রথমে একটি নিরপেক্ষ বা তৃতীয় পক্ষের কাছে জমা থাকে। যখন ক্রেতা পণ্য গ্রহণ করে এবং তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করে, তখনই এই তৃতীয় পক্ষ বিক্রেতার কাছে অর্থটি স্থানান্তর করে। এই প্রক্রিয়ায় ক্রেতা প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে রক্ষা পান এবং বিক্রেতাও লেনদেন নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ পান।
এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেমের সম্ভাব্য প্রভাব
বাংলাদেশে ই-কমার্সের দ্রুত বিকাশের সাথে সাথে ক্রেতাদের প্রতারণার অভিজ্ঞতা এবং ব্যবসায়িক জটিলতার বিষয়গুলোও সামনে এসেছে। এসক্রো সিস্টেম প্রতারণা রোধের পাশাপাশি ক্রেতাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে, যা ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। পেটাকার এই এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যেই একটি নিরাপদ সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির লক্ষ্য হবে সিস্টেমটির কার্যকারিতা পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনে নীতিমালা প্রণয়ন, যা এই সিস্টেমের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।
ই-কমার্সে এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেমের সুবিধা
- নিরাপত্তা বৃদ্ধি: ক্রেতারা নিশ্চিত হতে পারেন যে তাঁদের অর্থ সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছাবে এবং পণ্য পেতে দেরি বা প্রতারণার কোনো সুযোগ থাকবে না।
- ক্রেতা আস্থা বৃদ্ধি: এসক্রো সিস্টেম ক্রেতাদের আস্থা ফেরাতে সহায়ক হবে এবং তাঁদের পুনরায় কেনাকাটার উৎসাহ জোগাবে
- বিক্রেতার লাভ: বিক্রেতারা নিশ্চিত থাকেন যে পণ্য বিক্রির পরে তাঁদের অর্থও সঠিকভাবে পাবেন।
- বাজার সম্প্রসারণ: এসক্রো সিস্টেমের মাধ্যমে ই-কমার্স ব্যবসা বিস্তৃত হবে এবং নতুন উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়বে।
এসক্রো পেমেন্ট সিস্টেম বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থা গড়ে তুলবে। পেটাকার এই উদ্যোগ, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্য অংশীদারদের সহায়তায়, ই-কমার্সে এক নতুন যুগের সূচনা করতে সক্ষম হবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের নতুন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম – লাইকবুক
অর্থ আদান-প্রদানে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবা – পেটাকা