চোট সমস্যায় জর্জরিত ম্যানচেস্টার সিটির দুর্দশা যেন থামার নামই নিচ্ছে না। ইতিমধ্যেই টানা চার ম্যাচ হেরে লজ্জাজনক নজির গড়েছিল পেপ গার্দিওলার দল। এবার ঘরের মাঠ ইতিহাদেও এল এক অবিশ্বাস্য পরাজয়। টটেনহ্যামের কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে, ক্লাবটি ঘরের মাঠে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার দেখল।
এর আগে, ২০০৩ সালে ঘরের মাঠ মেইন রোডে আর্সেনালের কাছে ৫-১ গোলে হার দেখেছিল সিটি। কিন্তু সেই দিনের দুঃখকেও ছাড়িয়ে গেল বর্তমানের এই পরাজয়। এদিন, টটেনহ্যামের ইংলিশ মিডফিল্ডার জেমস ম্যাডিসনের অনবদ্য পারফরম্যান্সে কাঁপল সিটির রক্ষণ। ম্যাচের ১৩ এবং ২০ মিনিটে জোড়া গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ম্যাডিসন। দ্বিতীয়ার্ধে পেদ্রো পোরো (৫২ মিনিট) ও যোগ করা সময়ে ব্রেনান জনসনের গোল সিটির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়।
এই ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির দুর্ভাগ্য এক নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে। ২০০৬ সালের পর এই প্রথম টানা পাঁচ ম্যাচে হারল তারা। শুধু তাই নয়, ইতিহাদে টানা ৫২ ম্যাচে অপরাজিত থাকার যে গৌরব ছিল, সেটিও শেষ হয়ে গেল টটেনহ্যামের কাছে।
এটি গার্দিওলার কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। গত সপ্তাহে টানা চার হারের নজির গড়ার পর, এবার পেলেন পঞ্চম হার। দুই দিন আগেই ক্লাবটি তার সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্সে ভক্তরা প্রশ্ন তুলছে, গার্দিওলার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় কি কোনো গলদ রয়েছে?
এই মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির পরাজয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল গত অক্টোবরে, লিগ কাপে টটেনহ্যামের কাছেই হার দিয়ে। এরপর বোর্নমাউথ, স্পোর্টিং ও ব্রাইটনের কাছে হার সিটির আত্মবিশ্বাসে চির ধরায়। সেই চক্র আবার ঘুরে টটেনহ্যামের কাছে পঞ্চম হার এনে দিল।
এখনও পর্যন্ত লিগে ১২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে সিটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ২৮। যদিও এখনও লিগ শিরোপার দৌড়ে সিটি রয়েছে, তবে দলের এমন পারফরম্যান্স ভক্তদের হতাশ করছে। বিশেষ করে আর্লিং হালান্ডের মতো তারকা খেলোয়াড় থাকার পরও সিটির আক্রমণভাগ যেন ধার হারিয়েছে।
চলতি মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির চোট সমস্যা ও রক্ষণভাগের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় গার্দিওলার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দলকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তোলা। পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য এই পরাজয়কে প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজে লাগাতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই দুঃসময়ে কি ম্যানচেস্টার সিটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, নাকি এই মৌসুমটা তাদের জন্য শুধুই এক হতাশার অধ্যায় হয়েই থাকবে?
আরও পড়ুন
সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে বার্সেলোনার নাটকীয় ড্র