গাজার পর এবার লেবাননেও হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে বৈরুতে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বারবার লেবাননকে দ্বিতীয় গাজার মতো হয়ে না ওঠার আহ্বান জানালেও পরিস্থিতি তার কথাকেই যেন সত্য প্রমাণ করছে। গাজায় এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে ইসরাইলের হাতে। লেবাননেও একই ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছে দেশটি, সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।
১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর ওয়াকি-টকি ও পেজার বিস্ফোরণের মাধ্যমে লেবাননে গোপনে হামলা চালায় ইসরাইল। এরপর ২০ অক্টোবর থেকে পুরোদমে আক্রমণ শুরু করে। এক সপ্তাহেরও কম সময়ে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রায় ৬২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার ইসরাইলকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হামলা থামানো হবে না।
এদিকে, ইসরাইল লেবাননে স্থল অভিযান করার পরিকল্পনা করছে। দেশটির সামরিক বাহিনী সম্ভাব্য স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। তাই সামনে লেবাননে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, এবং শিগগিরই যুদ্ধ থামার সম্ভাবনাও নেই।
হিজবুল্লাহ কি পারবে ইসরাইলকে প্রতিরোধ করতে?
ইসরাইলের হামলায় লেবাননে বহু মানুষের মৃত্যু হলেও হিজবুল্লাহর পাল্টা হামলায় ইসরাইলে তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। যদিও হিজবুল্লাহর কাছে আধুনিক অস্ত্র আছে বলে জানা গেছে, তবে সেগুলো কতটা কার্যকর হবে তা সময়ই বলবে।
লেবানন থেকে অনেক দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পর্তুগালসহ অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে। তুরস্ক, ইতালি, বেলজিয়াম, রাশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশ নাগরিকদের ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এসব থেকে বোঝা যাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
ইসরাইলের এই হামলার প্রভাব লেবাননের মানুষের জীবনে গভীরভাবে পড়েছে। স্কুল, বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। বহু মানুষ বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। আল-জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা গত এক বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
গাজায় ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের আক্রমণ চলছে। কিন্তু লেবাননের হিজবুল্লাহ ছাড়া কেউই হামাসের পাশে দাঁড়ায়নি। বিভিন্ন দেশ শুধু ফাঁকা কথা বলেছে এবং জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও, এতে ইসরাইলের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। লেবাননের ক্ষেত্রেও হয়তো এর চেয়ে বেশি কিছু হবে না।
আরও পড়ুন
নেইমারের মাঠে ফেরা অনিশ্চিত: জানুয়ারিতে হতে পারে নিবন্ধন