গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে কুয়াকাটায় টানা বৃষ্টি, উত্তাল রয়েছে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর। পটুয়াখালীতে জলাবদ্ধতা ও ফসলের ক্ষতি।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে কুয়াকাটা সহ পটুয়াখালীতে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আজও কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে, সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ঝড়ো বাতাসের শঙ্কা রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বৃষ্টিপাত: গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালী জেলায় ২২১.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এই বৃষ্টির ফলে পটুয়াখালীর নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষকে নানা ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ফসলের ক্ষতি ও চাষীদের দুশ্চিন্তা: টানা বৃষ্টির কারণে জেলার অনেক আমন ক্ষেত, মাছের ঘের এবং পুকুর তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আমন ধান চাষীরা ফসল হারানোর আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় আছেন। বর্ষাকালীন সবজি চাষীরাও একই রকম সংকটে পড়েছেন। বৃষ্টির কারণে জমিতে দীর্ঘক্ষণ পানি জমে থাকায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, যা এ বছর চাষিদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগর উত্তাল, সমুদ্রবন্দরে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত: নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর অতি উত্তাল রয়েছে। কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, নদ-নদীর পানির উচ্চতাও বেড়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাতাসের গতিবেগও বেড়েছে এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে পটুয়াখালীসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরগুলোতে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সমুদ্রে থাকা মাছধরা ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জনজীবনে ভোগান্তি: টানা বৃষ্টির ফলে পটুয়াখালী জেলায় স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। রাস্তা, ঘাট, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাব আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সতর্কতা ও প্রস্তুতি: আবহাওয়া অধিদপ্তর জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় চাষী ও সাধারণ মানুষ বৃষ্টির থামার আশায় আছে এবং পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসার অপেক্ষায়।
আরও পড়ুন
ভারতে ঘাম ঝরাচ্ছে বাংলাদেশী টাইগারা
হাসিনার পতনের ৪০ দিন উপলক্ষ্যে ‘স্বৈরাচারের চল্লিশা’ উদযাপন