জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য এক নতুন সুবিধা নিয়ে এসেছে। ‘হোয়াটসঅ্যাপ পে’ নামে এই ফিচারটি সরাসরি মেসেজিং অ্যাপ থেকেই সহজে আর্থিক লেনদেন করার সুযোগ দেবে। ২০২১ সালে ভারতের প্রায় ১০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার পর এবার এটি আরও বিস্তৃতভাবে চালু করা হয়েছে।

সীমাবদ্ধতা প্রত্যাহার ও সম্প্রসারণ
এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই) হোয়াটসঅ্যাপ পে-এর ওপর থাকা বিধিনিষেধের সীমাবদ্ধতা তুলে নিয়েছে। ফলে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা এখন সরাসরি ইউপিআই পরিষেবা ব্যবহার করে টাকা আদান-প্রদান করতে পারবেন। এর ফলে আলাদা কোনো পেমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে না। হোয়াটসঅ্যাপ পে-এর মাধ্যমে লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুত হয়ে যাবে।
কীভাবে হোয়াটসঅ্যাপ পে ব্যবহার করবেন?
হোয়াটসঅ্যাপ পে ব্যবহার করতে চাইলে কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
- হোয়াটসঅ্যাপ পে সেটআপ
প্রথমে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এরপর হোয়াটসঅ্যাপ পে চালু করতে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে ইউপিআই আইডি লিঙ্ক করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় আপনার ফোন নম্বরের সাথে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিঙ্ক হবে। - পেমেন্ট পাঠানোর নিয়ম
– হোয়াটসঅ্যাপ পে সেটআপ সম্পন্ন হলে আপনি আপনার যেকোনো কন্টাক্টকে পেমেন্ট পাঠাতে পারবেন।
– পেমেন্ট পাঠানোর জন্য নির্দিষ্ট চ্যাট উইন্ডোতে গিয়ে ‘পেমেন্ট’ অপশন নির্বাচন করতে হবে।
– টাকা পাঠানোর সময় আপনাকে ইউপিআই পিন প্রদান করতে হবে, যা আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের জন্য নির্ধারিত। - পেমেন্ট গ্রহণ
– পেমেন্ট গ্রহণকারীকে অবশ্যই হোয়াটসঅ্যাপ পে সেটআপ করতে হবে।
– একবার পেমেন্ট গ্রহণ করার পর তা সরাসরি তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
হোয়াটসঅ্যাপ পে-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
– লেনদেনের সময় ব্যবহারকারীকে তার ইউপিআই পিন প্রদান করতে হয়, যা সম্পূর্ণ গোপন থাকে।
– হোয়াটসঅ্যাপ পে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে ব্যবহারকারীর তথ্য, মেসেজ এবং লেনদেনের তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
– প্রতিটি লেনদেনের জন্য একাধিক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের জালিয়াতির আশঙ্কা না থাকে।
হোয়াটসঅ্যাপ পে-এর মাধ্যমে এখন থেকে ব্যবহারকারীরা তাদের দৈনন্দিন লেনদেন আরও সহজে এবং দ্রুততার সঙ্গে করতে পারবেন। এই সুবিধা আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সময় সাশ্রয় করবে এবং ব্যবহারকারীদের জীবনকে আরও আধুনিক ও সহজ করবে। নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতার ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ পে নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
ভারতে শুরু হলেও ভবিষ্যতে অন্যান্য দেশেও হোয়াটসঅ্যাপ পে পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির সঙ্গে এই ধরনের ফিচার ব্যবহারকারীদের জন্য একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।
আরো পড়ুন
বাংলাদেশের ই-কমার্সে এসক্রো পেমেন্ট: আস্থার নতুন দিগন্ত