
দীর্ঘ দেড় বছর পর অবশেষে গোলের দেখা পেলেন নেইমার। এক সময়ের দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ড, যিনি ব্রাজিলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের একজন, গোলখরার দীর্ঘ এক পর্ব পেরিয়ে আজ নিজের শৈশবের ক্লাব সান্তোসের হয়ে প্রতিপক্ষ অ্যাগুয়া সান্তার বিপক্ষে লক্ষ্যভেদ করলেন।
২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত—এই ৫০২ দিনে নেইমার একবারও প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকার কারণে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালও তাঁকে বিদায় জানিয়ে দেয়। এরপর শীতকালীন দলবদলে নিজের পুরনো ভালোবাসা, ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব সান্তোসে ফিরে আসেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। চার ম্যাচ পর আজ সেই কামব্যাক রাঙিয়ে তুললেন গোলের মাধ্যমে।
ম্যাচের ১২ মিনিটে নেইমার বক্সের ভেতর ড্রিবল করে ঢোকার চেষ্টা করেন, কিন্তু প্রতিপক্ষের ফাউলের শিকার হন। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান, আর সেই স্পটকিক থেকেই জাল খুঁজে পান নেইমার। তাঁর গোলের পর পুরো স্টেডিয়ামে উল্লাসের ঝড় বয়ে যায়। ম্যাচ শেষে দেখা যায়, নেইমারের এই গোল দলকে ৩-১ গোলের জয় এনে দিয়েছে। এটি ছিল সান্তোসে ফেরার পর তাঁর প্রথম জয়। এর আগে তিনটি ম্যাচ খেলে দুটিতে ড্র ও একটিতে হার দেখে ক্লাবটি।
নেইমারের শেষ গোল এসেছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে, এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে নাসাজি মানজাদারানের বিপক্ষে আল হিলালের হয়ে। তবে সেই গোলের পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়ে গুরুতর চোট পান বার্সেলোনার সাবেক এই তারকা। যে চোট তাঁকে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ঠেলে দেয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে মাঠে ফিরলেও এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের দুটি ম্যাচে মাত্র ৪২ মিনিট খেলেন, কিন্তু গোলের দেখা পাননি।
অবশেষে আজকের এই পেনাল্টি গোলের মাধ্যমে নেইমার তাঁর ক্লাব ক্যারিয়ারের ৩৬১তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন। সান্তোসের হয়ে প্রথম দফায় ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ২২৫ ম্যাচ খেলে ১৩৮ গোল করেছিলেন। আজকের গোল তাঁর ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গোলের পর নেইমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ জয়। দলকে অভিনন্দন। এগিয়ে চলো সান্তোস।’
নেইমারের এই প্রত্যাবর্তন শুধুমাত্র তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য নয়, বরং সান্তোস ক্লাব এবং তাঁর ভক্তদের জন্যও এক নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে। এই গোল কি নেইমারের হারানো ফর্ম ফিরে পাওয়ার সূচনা? সময়ই হয়তো সেই উত্তর দেবে।