ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ যখন ভারত, উত্তেজনা তখন বাড়তি। আর সেটি যদি কোনো ফাইনাল হয়, তবে উত্তেজনার পারদ তো ছুঁয়ে যায় চূড়া। দুবাইয়ে আজ এমনই এক রোমাঞ্চকর ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল আবারও এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হলো।

গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এই শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার ফাইনালে ৫৯ রানের দাপুটে জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলল আজিজুল হাকিমের দল।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৪৯.১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তুলেছিল ১৯৮ রান। রিজানের ৪৭, শিহাব জেমসের ৪০ ও ফরিদ হাসানের ৩৯ রানের ইনিংস দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেয়। তবে ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একসময়ে বড় স্কোরের আশা ম্লান হয়ে যায়। যুধজিৎ, হার্দিক ও চেতন—তিন বোলারই নেন দুটি করে উইকেট।
১৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই চাপে পড়ে ভারত। দ্বিতীয় ওভারে আল ফাহাদের বলে বোল্ড হন আয়ুশ মাত্রে। এরপর বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধার বলে বিদায় নেন ১৩ বছর বয়সী প্রতিভা বৈভব সূর্যবংশী, যিনি সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন। তবে আজ মাত্র ৯ রান করেই শিহাব জেমসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ভারত কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করে। অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান ও কার্তিকেয়া জুটি দলকে টেনে তুলছিল। তবে পেসার ইকবাল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিং সেই চেষ্টা থামিয়ে দেয়। ইকবাল তার দারুণ এক স্পেলে টানা দুই বলে ফিরিয়ে দেন কার্তিকেয়া (২১) ও নিখিল কুমারকে (০)। এর পরের ওভারেই তিনি শিকার করেন হরবংশ পাঙ্গুলিয়াকে।
ভারতের অধিনায়ক আমান কিছুক্ষণ লড়াই চালালেও বাংলাদেশের স্পিনারদের সামনে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩২তম ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের ঘূর্ণিতে বোল্ড হন আমান। এরপর ভারতের ইনিংস গুটিয়ে যেতে সময় নেয় মাত্র কয়েক ওভার। শেষ দুই উইকেটও তুলে নেন আজিজুল।
বাংলাদেশের পেসাররা ছিলেন অসাধারণ। ইকবাল হোসেন ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য তাকেই ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ১৯৮ (৪৯.১ ওভার)
ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ১৩৯ (৩৫.২ ওভার)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৫৯ রানে জয়ী।