বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে দারুণ এক রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিল দুর্বার রাজশাহী ও ফরচুন বরিশাল। তবে ১৯৭ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়েও শেষ হাসি হাসতে পারেনি রাজশাহী। বরিশাল তাদের পরিণত ব্যাটিং দিয়ে ৪ উইকেটের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয়। দলের এমন পরাজয়ে রাজশাহীর অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় হতাশা প্রকাশ করেছেন মূলত বোলারদের ব্যর্থতা নিয়ে।

ম্যাচের শুরুতে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে দুর্বার রাজশাহী। শুরু থেকেই ব্যাটাররা দেখিয়েছেন দাপুটে পারফরম্যান্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে দলটি সংগ্রহ করে ১৯৭ রান। ইনিংসটি ছিল ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার নিদর্শন। এমন স্কোর বিপিএলের মতো মঞ্চে জয়ের জন্য যথেষ্ট বলেই মনে হয়েছিল।
১৯৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ফরচুন বরিশালের ব্যাটাররা দেখিয়েছেন অসাধারণ সাহসিকতা ও অভিজ্ঞতার ছাপ। ১৯ ওভার ১ বলেই ৬ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে তারা। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২৬ বলে ৫৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস ছিল জয়ের মূল ভিত্তি। তিনি শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে দলকে সঠিক পথ দেখান।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় দলের বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,
“বিশাল ঘাটতি বলতে চাই না, তবে অভিজ্ঞতার অভাব ছিল। শফিউল ভাই দীর্ঘদিন ভালো পারফর্ম করেছেন। মোহর শেখ এনসিএলে দারুণ করেছে। মৃত্যুঞ্জয় ভালো ফর্মে ছিল। তবে বিপিএলের মতো বড় মঞ্চে অভিজ্ঞতার অভাব এবং দর্শকদের চাপ সম্ভবত বোলারদের প্রভাবিত করেছে।”
বিজয় আরও বলেন, দলের যে বোলাররা ছিলেন তারা সামর্থ্যবান। তবে এমন মানের ম্যাচে অভিজ্ঞতার ঘাটতি স্পষ্ট। ভালো পারফরম্যান্সের জন্য বিদেশি বা অভিজ্ঞ বোলার বিবেচনায় নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অসাধারণ ইনিংস নিয়ে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বিজয়। তিনি বলেন,
“রিয়াদ ভাই ও মুশফিক ভাই এমন অনেক ম্যাচ বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন। তারা জানেন কিভাবে চাপ সামলে ম্যাচ শেষ করতে হয়। বিশ্বের সেরা ফিনিশারদের তালিকায় মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম থাকবে। তাদের উপস্থিতি বোলারদের মধ্যে একধরনের ভীতি তৈরি করেছে, যা হয়তো আমাদের বোলারদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।”
উইকেটের প্রশংসা করে বিজয় বলেন,
“উইকেট ছিল অসাধারণ। এমন উইকেটে খেলা সব দলের জন্যই উপভোগ্য। দর্শকরাও দারুণ ম্যাচ উপভোগ করেছেন। যদিও আমরা হারলাম, তবে এ ধরনের শুরু বিপিএলের জন্য ইতিবাচক। আমাদের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করব এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোতে আরও ভালো পারফর্ম করার প্রত্যাশা রাখছি।”
বিপিএলের মতো বড় মঞ্চে অভিজ্ঞতা কতটা জরুরি তা স্পষ্টতই উল্লেখ করেছেন বিজয়। তিনি জানান, দলের বর্তমান বোলারদের জায়গায় নতুন কাউকে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে, তবে তাও নির্ভর করবে তার সামর্থ্যের ওপর। তিনি আরও যোগ করেন, দলের সামগ্রিক উন্নতির জন্য ভালো মানের বিদেশি খেলোয়াড়দের দলে অন্তর্ভুক্তি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
দুর্বার রাজশাহী তাদের প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হলেও দলটির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী অধিনায়ক। তিনি জানান, পুরো আসর জুড়ে দলটি নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণে সচেষ্ট থাকবে এবং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও ভালো পারফর্ম করবে।