সৌরজগতের নানা রহস্যময় গ্রহাণুর মধ্যে অন্যতম একটি স্বল্প-পরিচিত গ্রহাণু হল ‘১৬ সাইকি’। মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানে অবস্থান করা এই বৃহৎ গ্রহাণুটি ১৮৫২ সালে ইতালীয় জ্যোতির্বিদ অ্যানিবেলে ডি গ্যাসপারিস আবিষ্কার করেন। সম্প্রতি এই গ্রহাণুটিকে নিয়ে আবার আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। নাসা ২০২২ সালের অক্টোবরে ‘সাইকি’ নামে একটি মহাকাশযান পাঠায়, যার উদ্দেশ্য এই রহস্যময় গ্রহাণুর সম্পদ পর্যবেক্ষণ করা।

নাসার পরিকল্পনা অনুযায়ী, সাইকি মহাকাশযানটি ২০২৯ সালের আগস্টে গ্রহাণুর কাছে পৌঁছবে। ইতিমধ্যেই নাসার এই মহাকাশযান থেকে পৃথিবীতে রহস্যময় লেজার সংকেত আসছে, যা প্রায় ২২ কোটি ৫৩ লক্ষ কিলোমিটার দূর থেকে ধরা পড়েছে। মহাকাশযানটির সঙ্গে শক্তিশালী ‘ডিপ স্পেস অপটিক্যাল কমিউনিকেশনস’ প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে, যা লেজার রশ্মির মাধ্যমে দ্রুত ও নির্ভুল যোগাযোগে সহায়ক।
লেজার প্রযুক্তি প্রথাগত রেডিও তরঙ্গের চেয়ে ১০ থেকে ১০০ গুণ দ্রুত গতিতে তথ্য প্রেরণ করতে সক্ষম। বর্তমানে গভীর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে সংকেত পাঠাতে যে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহৃত হয়, তার তুলনায় এই প্রযুক্তি অনেক সহজ ও উন্নত। এপ্রিল মাসের পরীক্ষায় সাইকি প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ২৫ মেগাবাইট তথ্য পাঠাতে সক্ষম হয়েছে, যা মহাকাশ যোগাযোগে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
এই অভিযানের দায়িত্বে রয়েছেন নাসার বিজ্ঞানী মীরা শ্রীনিবাসন। তিনি জানান, লেজার ব্যবহারের মাধ্যমে মহাকাশযান থেকে তথ্য সফলভাবে পৃথিবীতে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এর পাশাপাশি, প্রথাগত রেডিও তরঙ্গেও তথ্য প্রেরণ করা হয়, যা পরে তুলনা করে দেখা হয়। পরীক্ষায় লেজার ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ২৬৭ মেগাবাইট তথ্য পাঠানো সম্ভব হয়।
১৬ সাইকি সৌরজগতের বৃহৎ গ্রহাণুগুলির মধ্যে অন্যতম, যার গড় ব্যাস প্রায় ২২০ কিলোমিটার। এটি মূলত লোহা ও নিকেল দিয়ে তৈরি, যদিও বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন, এর কিছু অংশ সোনা দিয়ে গঠিত হতে পারে। সাইকির ঘনত্ব পৃথিবীর লোহা ও নিকেলের ঘনত্বের চেয়েও বেশি। গবেষকদের মতে, এটি কোনো বৃহৎ নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে তৈরি হয়েছে।
এই মিশনের মাধ্যমে নাসা মহাকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন
বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে গাছের নিচে চাপা একজনের মৃত্যু
পড়েঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উপকূলীয় ১৪ জেলায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ডানা: উপকূলে অতি তীব্র ঝড়
রাফিনহার হ্যাটট্রিকে বায়ার্নের বিপক্ষে বার্সেলোনার দাপুটে জয়