ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে দেশের ৯টি জেলা আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে বহু মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকে তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। এছাড়া বন্যার পানি গ্রামীণ সড়ক ও ফসলি জমি প্লাবিত করেছে, পুকুর ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হলো কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজার।
কুমিল্লা:
গোমতী নদীর পানি বাড়তে থাকায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। টানা বৃষ্টি ও ঢলের কারণে নদীর পানি ক্রমাগত বেড়ে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। চরাঞ্চলের কয়েক হাজার একর সবজিখেত পানির নিচে ডুবে গেছে।
ফেনী:
ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। স্বেচ্ছাসেবী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও কোস্টগার্ড উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হয়েছে।
নোয়াখালী:
নোয়াখালীর আটটি উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাতেই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। টানা তিন দিনের বৃষ্টির ফলে বেশিরভাগ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
সিলেট:
বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সুরমাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যেই সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জের খোয়াই নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
আখাউড়া স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানির তোড়ে অস্থায়ী সেতু ভেঙে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সব ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে, এবং প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া পাশের রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার কিছু অংশও বন্যার কবলে পড়েছে। সীতাকুণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, যেখানে হাজারো মানুষ এখনো পানিবন্দী। দীঘিনালার সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারে টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ছড়া ও নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার ৬২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন
ঘরে বসে আয় করার ১০টি সহজ উপায়
লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে ইনকাম Likebook থেকে
অর্থ আদান-প্রদানে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবা