ফুটবল বিশ্বের অন্যতম ছোট্ট দেশ সান মারিনো। মাত্র ৬১ বর্গ কিলোমিটারের দেশটি চারপাশে ইতালিতে বেষ্টিত। তাদের ফুটবল ইতিহাস বরাবরই ব্যর্থতায় মোড়া। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের সবচেয়ে নিচের দল হিসেবে পরিচিত সান মারিনো দীর্ঘদিন ধরে পরিচিতি পেয়েছে “সবচেয়ে বাজে দল” হিসেবে। বর্তমানেও তাদের অবস্থান ২১০তম। তবে গতকাল রাতে একটি অবিশ্বাস্য জয় দিয়ে তারা ফুটবল ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পথচলা শুরু করা সান মারিনো ৩৪ বছরের ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছে পরাজয়ের বৃত্তে। তারা মোট ২১১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে হেরেছে ১৯৮টি। ড্র করেছে মাত্র ১০টি ম্যাচ, আর জয় এসেছে মাত্র তিনটি।
প্রথম জয়টি এসেছিল ২০০৪ সালে, লিখেনস্টাইনের বিপক্ষে। এরপর জয়হীন অবস্থায় কাটিয়ে দিতে হয়েছে দীর্ঘ ২০ বছর এবং ১৪০টি ম্যাচ। কিন্তু ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আবারও সেই লিখেনস্টাইনের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় তারা। তবে সেটি ছিল তাদের নিজেদের মাঠে।
গতকাল রাতে উয়েফা নেশন্স লিগ-ডি এর গ্রুপ-১ এর ম্যাচে আবারও লিখেনস্টাইনের মুখোমুখি হয় সান মারিনো। তবে এবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় প্রতিপক্ষের মাঠ রাইনপার্ক স্টেডিয়ামে। আর এই ম্যাচেই সান মারিনো রচনা করে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম অবিশ্বাস্য গল্প।
প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষের মাঠে জয় তুলে নেয় সান মারিনো। ১০১তম অ্যাওয়ে ম্যাচে এসে ৯৬টি পরাজয় ও ৪টি ড্রয়ের পর এলো এই জয়ের স্বাদ। শুধু জয়ই নয়, এই ম্যাচে তারা গড়ে আরও কয়েকটি রেকর্ড। এক ম্যাচে প্রথমবারের মতো ৩টি গোল করে এবং মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো একাধিক গোল করতে সক্ষম হয় দলটি।
ম্যাচের শুরুতে স্বাগতিক লিখেনস্টাইন এগিয়ে যায় অ্যারন সেলের গোলে। বিরতির আগে তারা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে। বিরতির পর প্রথম মিনিটেই লরেঞ্জো লাজ্জারির দুর্দান্ত গোলে সমতা ফেরায় সান মারিনো। এরপর ৬৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন নান্নি। তাদের আক্রমণাত্মক খেলার ধারায় মিনিট দশেক পর আলেসান্দ্রো গোলুনচ্চি স্কোরলাইন ৩-১ করেন।
এই জয়ের মাধ্যমে সান মারিনো নিশ্চিত করে তাদের জায়গা উয়েফা নেশন্স লিগের গ্রুপ ‘সি’-তে। ৪ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট। গ্রুপের আরেক দল জিব্রাল্টার ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় এবং লিখেনস্টাইন ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
এই জয় শুধুই একটি ম্যাচ জেতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ৩৪ বছরের অপেক্ষার অবসান, যেখানে তারা দেখিয়েছে লড়াই করার ক্ষমতা। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম জয়, নেশন্স লিগে প্রমোশন, এবং ফুটবলের ইতিহাসে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন—সব মিলিয়ে এই জয় সান মারিনোর ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।
রবের্তো সিভোলির দল এ জয় দিয়ে প্রমাণ করেছে, সংকট ও সীমাবদ্ধতাকে জয় করার জন্য প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস ও অদম্য মনোভাব। তাদের এই অসাধারণ সাফল্য ছোট দলগুলোকে অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং ফুটবল বিশ্বে সান মারিনোর নামটি আলাদা করে উচ্চারিত হবে।
[gallery ids="7275"] বরগুনার আমতলী পৌরসভায় এক পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ কমপক্ষে ১৫ জন…
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তর রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে গেছে এমিরেটসের একটি কার্গো উড়োজাহাজ। ফ্লাইট…
পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশনির বাসায় ছুরিকাঘাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন…
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাড়াহুড়োর…
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষণা করেছে যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলটি ‘শাপলা’ ও ‘শাপলায়’ প্রতীক…
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরগুনার আমতলী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় রূপ বানু (৬০) নামে এক বৃদ্ধা নিহত…