
আসছে শুক্রবার, ১০ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়, ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক রোমাঞ্চকর প্রীতি ম্যাচ। বিশ্ব ফুটবলের দুই শক্তিধর দল—দক্ষিণ কোরিয়া এবং ব্রাজিল—মুখোমুখি হতে চলেছে এক বহুল প্রতীক্ষিত লড়াইয়ে। ম্যাচটি যতটা “প্রীতি” তার চেয়েও বেশি “প্রস্তুতি”—কারণ উভয় দলই চোখ রাখছে আসন্ন ২০২৬ বিশ্বকাপের দিকে।
এই ম্যাচটি শুধু সৌজন্যমূলক নয়; বরং দুই দলের কোচদের জন্য এটি খেলোয়াড়দের যাচাই ও কৌশলগত প্রস্তুতির এক দারুণ সুযোগ।
ব্রাজিল, যারা তাদের শেষ ম্যাচে বলিভিয়ার কাছে ১–০ গোলে পরাজিত হয়েছে, এবার মরিয়া ঘুরে দাঁড়াতে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের সাম্প্রতিক ম্যাচে মেক্সিকোর সঙ্গে ২–২ গোলে ড্র করেছিল এবং বর্তমানে দুর্দান্ত ধারায় রয়েছে।
হং মিয়ং-বো’র নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ কোরিয়া দল ইতিমধ্যেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে।
তারা বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে গ্রুপ বি’তে শীর্ষে থেকে যোগ্যতা অর্জন করেছে।
১৯৮২ সালের পর থেকে তারা একটিও বিশ্বকাপ মিস করেনি—যা এশিয়ার কোনো দলের জন্য অনন্য রেকর্ড।
২০০২ সালের সেই ঐতিহাসিক বিশ্বকাপে তারা চতুর্থ হয়ে ফুটবল দুনিয়াকে চমকে দিয়েছিল।
২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপেও তারা শেষ ষোলোতে পৌঁছেছিল।
বর্তমানে কোরিয়ান দলটি অসাধারণ ফর্মে আছে—শেষ ১৯ ম্যাচে মাত্র একবার পরাজিত হয়েছে।
গত মাসেই তারা প্রীতি ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়েছে এবং মেক্সিকোর সঙ্গে ড্র করেছে।
যদিও ব্রাজিলের বিপক্ষে তাদের অতীত রেকর্ড তেমন অনুকূল নয় (৮ ম্যাচে ৭ হার), তবুও ১৯৯৯ সালের মার্চে ১–০ গোলে ঐতিহাসিক জয় আজও কোরিয়ান সমর্থকদের মনে অমলিন।
ব্রাজিলও ইতিমধ্যেই ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে।
তাদের লক্ষ্য সুস্পষ্ট—দীর্ঘ ২৪ বছর পর আবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া।
২০০২ সালের পর থেকে ব্রাজিল আর বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁতে পারেনি; ২০১৮ ও ২০২২—দুইবারই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।
তবে ২০১৯ সালে তারা কোপা আমেরিকা জিতে নিজেদের ঐতিহ্য আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়।
এবারের প্রীতি ম্যাচে তারা নিজেদের নতুন ছন্দ খুঁজে পেতে চায়।
শেষ ৫ ম্যাচে মাত্র ২ জয় তাদের বর্তমান ফর্মের অস্থিরতার প্রমাণ।
তবে কার্লো আনচেলত্তির অভিজ্ঞ নেতৃত্বে ব্রাজিল এখন পুনর্গঠনের পথে।
অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে তারা দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে,
যেখানে কোচ নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়দের মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার মূল শক্তি:
- দলের নেতৃত্বে থাকছেন অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিন, যিনি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তুলবেন ১৩৭তম বারের মতো।
- লি কাং-ইন (PSG) ও কিম মিন-জায়ে (বায়ার্ন মিউনিখ) প্রথম একাদশে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
- তরুণ মিডফিল্ডার জেন্স ক্যাসট্রপ তার তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতে পারেন।
সম্ভাব্য একাদশ (দক্ষিণ কোরিয়া):
সিউং-গিউ; মুন-হোয়ান, মিন-জায়ে, ইউ-মিন, জু-সুং; জে-সুং, জিন-গিউ; কাং-ইন, ডু-জায়ে, ক্যাসট্রপ; হিউং-মিন।
ব্রাজিলের মূল শক্তি:
- গোলপোস্টে থাকবেন বেন্তো, যিনি সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে চমৎকার পারফর্ম করেছেন।
- অ্যালিসন বেকার, মার্কুইনহোস এবং রাফিনহা চোটের কারণে বাইরে থাকলেও
ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও রিচার্লিসন আক্রমণভাগে থাকবেন। - মিডফিল্ডে ক্যাসিমিরো ও ব্রুনো গুইমারেস জুটি তৈরি করবে প্রিমিয়ার লিগের শক্তিশালী কেন্দ্র।
- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাথিউস কুনিয়া ফিরছেন ১০ নম্বর পজিশনে।
সম্ভাব্য একাদশ (ব্রাজিল):
বেন্তো; ভ্যান্ডারসন, মিলিতাও, গ্যাব্রিয়েল, সান্তোস; ক্যাসিমিরো, গুইমারেস; এস্তেভাও, কুনিয়া, ভিনিসিয়াস; রিচার্লিসন।
এই ম্যাচের ফলাফল অনুমান করা সহজ নয়। দক্ষিণ কোরিয়া গত কয়েক বছরে তাদের খেলা দিয়ে দেখিয়েছে যে তারা আর “আন্ডারডগ” নয়—বিশ্বের যেকোনো দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম।
তবে ব্রাজিলের দলে এখনো এমন কিছু নাম রয়েছে, যারা এক মুহূর্তে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিতে পারে।
🕔 ম্যাচের সময়সূচি
📅 তারিখ: শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
🕔 সময়: বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫:০০টা
🏟️ ম্যাচ: দক্ষিণ কোরিয়া 🇰🇷 বনাম ব্রাজিল 🇧🇷
📺 প্রচার: নির্ধারিত ক্রীড়া চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
💻 বিনামূল্যে অনলাইনে (অ্যাপ ছাড়া):
- গুগল বা ক্রোম ব্রাউজারে “Sportzfy” অ্যাপটি ডাউনলোড করে দেখা যেতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে:
- ম্যাচের সময় ফেসবুকে “brazil vs South Korea Live match today” লিখে সার্চ দিলে বিভিন্ন পেজ ও ইউজারের লাইভ স্ট্রিম পাওয়া যাবে।