
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে সমুদ্রপথে পাচারের সময় ৪ লাখ পিস ইয়াবাসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সারাদেশে মাদক নির্মূল এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় যৌথ বাহিনীর স্পেশাল অপারেশন “ডেভিল হান্ড” পরিচালিত হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৮, সিপিসি-১, পটুয়াখালী আভিযানিক দল এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের বিসিজি স্টেশন নিজামপুরের সমন্বয়ে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা থেকে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত পর্যন্ত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের লেবুর চর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লক্ষ্য করে, একদল ইয়াবা পাচারকারী গভীর সমুদ্রে একটি ফিশিং ট্রলারে অবস্থান করছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ট্রলারটিকে অনুসরণ করা হয় এবং অভিযানের একপর্যায়ে এটি আটক করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, ট্রলারের জালের মধ্যে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল ১ লাখ পিস ইয়াবা। সঙ্গে সঙ্গে ১৬ জন পাচারকারীকে আটক করা হয়।
পরবর্তীতে, অভিযানের পরবর্তী ধাপে পরিত্যক্ত অবস্থায় আরও ৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযানের মাধ্যমে মোট ৪ লাখ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়, যা দেশের অন্যতম বৃহৎ মাদক চালান ধরার সফল অভিযানগুলোর মধ্যে একটি।
গ্রেফতারকৃত ১৬ জন ইয়াবা পাচারকারীর নাম ও পরিচয়:
১. নবি হোসেন (৫৩)
২. মনির উদ্দিন (৪৮)
৩. সোয়দ আলম (৩৭)
৪. মোফাচ্ছেল হোসেন (৬০)
৫. মোবারক হোসেন (৪৫)
6. ছবুর আহম্মদ (৫৪)
৭. সেলিম মাঝি (৪২)
৮. ওমর ফারুক (২৮)
৯. তহিদুল আলম (৪৮)
১০. আবু তালেব (৪০)
১১. আব্দুল নবী (৩০)
১২. ফজলে করিম (৪০)
১৩. মোস্তাক আহম্মদ (৪৮)
১৪. আব্দুল খালেক (৪০)
১৫. আলফাত (৩০)
১৬. খলিল আহম্মদ (৩৯)
তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। তাদের দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রপথে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে তাদেরকে মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযানে জব্দকৃত ৪ লাখ পিস ইয়াবাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান আগেও ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। দেশ থেকে মাদক নির্মূল করতে আমাদের এই অভিযান আরও কঠোর হবে।”
কুয়াকাটার এই সফল অভিযান আবারও প্রমাণ করলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনে সর্বদা প্রস্তুত এবং দেশের যুবসমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।