ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা একজন বড় খেলাধুলা-প্রেমী, যা তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রায়শই উঠে আসে। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি খোলাখুলিভাবে ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দল এবং তার প্রিয় ক্লাব, করিন্থিয়ান্সের পারফরম্যান্সের সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন ব্রাজিলের জাতীয় দলের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা এবং দেশের বাইরে খেলা ফুটবলারদের নিয়ে।
২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে পরাজয়ের পর থেকেই ব্রাজিলের ফুটবল দলে শুরু হয় দুঃসময়। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শক্তিশালী এই দেশটি জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকা থেকেও খালি হাতে ফেরে। জাতীয় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শুধু বিশ্বকাপেই নয়, ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও নিজেদের সেরা ছন্দে নেই ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে তারা ৯ ম্যাচ শেষে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে, যা তাদের ঐতিহাসিক মানের তুলনায় হতাশাজনক।

লুলা মনে করেন, ব্রাজিলের জাতীয় দলের ফুটবলাররা তাদের ক্লাব ফুটবলে ভালো পারফর্ম করলেও দেশের হয়ে সেরাটা দিতে পারছেন না। তিনি বিশেষভাবে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগোসহ যারা ইউরোপের লিগে খেলেন তাদের পারফরম্যান্সের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তার মতে, দেশের বাইরের লিগে খেলা খেলোয়াড়দের বদলে ব্রাজিলিয়ান লিগে খেলা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া উচিত।
চিলির বিপক্ষে ব্রাজিলের ম্যাচ শেষে এক রেডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যারা বিদেশে খেলে, তারা ব্রাজিলে খেলা খেলোয়াড়দের চেয়ে ভালো নয়।” তিনি আরও জানান, তিনি সম্প্রতি ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের পরামর্শ দিয়েছেন যেন ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগে খেলা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে ডাক দেওয়া হয়। লুলার মতে, “একদল তরুণ খেলছে যারা এখনো তারকা নয়, কিন্তু ব্রাজিলে একই মানের খেলোয়াড় আছে যেমনটা আমরা বিদেশে দেখি। ফলে তাদেরই সুযোগ দেওয়া উচিত, যারা এখানে আছে।”

লুলার এই মন্তব্য জাতীয় দল নির্বাচনের প্রচলিত নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে ব্রাজিলে প্রতিভার অভাব নেই, বরং সঠিক সুযোগ না পাওয়ার কারণে তারা পিছিয়ে আছে। দেশীয় ফুটবলের মান বাড়ানোর জন্য লুলার এই উদ্যোগ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এবং জাতীয় দলে তার দেওয়া এই প্রস্তাবকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা সময়ই বলে দেবে।