
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষণা করেছে যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলটি ‘শাপলা’ ও ‘শাপলায়’ প্রতীক নিয়েই অংশগ্রহণ করবে। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দৃঢ়ভাবে বলেছেন, “শাপলাই হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতীক, এবং সেই প্রতীক নিয়েই আমরা নির্বাচনে অংশ নেব।”
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন,
“আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি—শাপলা এবং শাপলাই হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির নির্বাচনী প্রতীক। সেই প্রতীক নিয়েই আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই এবং অংশ নেব। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান; তারা যদি সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত না নিয়ে কোনো গোষ্ঠীর প্রভাব বা প্রেসক্রিপশনে চলে, তাহলে এর প্রতিবাদ জানানো আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার যে কোনো অপচেষ্টা হলে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হব। রাজপথই হবে তখন আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল।” তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা সংঘাত চাই না, আমরা চাই গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।”
এ সময় নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম প্রশ্ন তোলেন,
“আমাদের কেন ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়া হবে না? সংবিধান অনুযায়ী একটি আইনি ব্যাখ্যা দিন। যদি ব্যাখ্যা দিতে পারেন, আমরা অন্য প্রতীক নেব; কিন্তু আপনি যদি আইনি ভিত্তি দেখাতে না পারেন, তাহলে সংবিধান অনুযায়ী আমাদের শাপলাই দিতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যক্তির নির্দেশে বা কারও রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করতে পারে না। তারা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান—তাদের কাজ সংবিধান ও গণতন্ত্রের চেতনা অনুযায়ী হওয়া উচিত।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টি একটি নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক দল, যারা সাংবিধানিক রাজনীতি, গণতন্ত্র, ও জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু যদি প্রশাসনিকভাবে বা রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে আমাদের নির্বাচনী অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়, তাহলে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনে নামব।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন,
“আপনারা একটি আইনি ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাই কারও ‘প্রেসক্রিপশনে’ নয়, সংবিধানের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিন। কোনো নতুন রাজনৈতিক দলের ওপর জোরপূর্বক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া কখনোই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির এই অবস্থান তাদের নির্বাচনী মাঠে উপস্থিতিকে আরও দৃঢ় করবে। তবে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে ‘শাপলা প্রতীক’ পাওয়া যাবে কি না—এটি এখন রাজনীতির নতুন আলোচ্য বিষয়।