
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী। এবারের গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম।
ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, দেশের ২০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এবার একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৬৫টি। অর্থাৎ, এক বছরে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে।
এমনই এক উদাহরণ পাওয়া গেছে পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর সাবিনা আক্তার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রতিষ্ঠানটির এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার জন্য চারজন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিল। তবে পরীক্ষার হলে অংশ নেয় মাত্র দুইজন। কিন্তু হতাশার বিষয়— এদের কেউই পাস করতে পারেননি।
এই অপ্রত্যাশিত ফলাফল নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক এস. এম. আবু তালেব বলেন,
“শিক্ষার্থীরা যদি লেখাপড়ায় মনোযোগী না হয়, তাহলে এমন ফলাফল আসবেই। তাছাড়া আমরা উচ্চ মাধ্যমিক শাখা নতুনভাবে চালু করেছি। এখনো শিক্ষক সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়— মাত্র একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চলছে। এজন্যই শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত প্রস্তুতি নিতে পারেনি।”
স্থানীয়দের মতে, কলেজটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাধ্যমিক স্তরে কার্যক্রম চালালেও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ শুরু করেছে অল্প কিছুদিন হলো। ফলে অবকাঠামো, শিক্ষক ঘাটতি ও একাডেমিক পরিবেশ এখনো গড়ে উঠছে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিশেষ তদারকি প্রয়োজন। শিক্ষক নিয়োগ, পাঠদান ও উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে আগামী বছরগুলোতে এমন হতাশাজনক ফলাফল কিছুটা হলেও কমে আসবে।
এদিকে, সারাদেশে এবার মোট ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬০৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৪ জন। অন্যদিকে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬১ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।
পটুয়াখালীর আউলিয়াপুর সাবিনা আক্তার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই ফলাফল দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে— প্রান্তিক অঞ্চলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার মান কতটা প্রস্তুত, আর শিক্ষার্থীরা কতটা সহায়তা পাচ্ছে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য?