বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭-এ। এর মধ্যে মর্মান্তিকভাবে ২৫ জনই শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭০ জন, যাঁদের মধ্যে ৭৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক জরুরি সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী ও চিকিৎসক ডা. মহম্মদ সায়েদুর রহমান। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্তকরণ ও আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
মর্মান্তিকভাবে নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। তাঁদের অধিকাংশের বয়স ১২ বছরের নিচে। বাকি দুজন নিহতের মধ্যে একজন ছিলেন বিমানটির পাইলট, এবং অন্যজন ঐ স্কুলের এক শিক্ষিকা। এক মুহূর্তেই শিশুদের স্বপ্ন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, মাতমে ভেঙে পড়ে স্কুলচত্বর ও এলাকার পরিবেশ।
ডা. সায়েদুর রহমান জানান, আহতদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলো সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে। পর্যাপ্ত রক্তদাতা থাকলেও কিছু বিরল রক্তের (নেগেটিভ গ্রুপ) প্রয়োজন হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে দগ্ধ শিশুদের সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান এফটি-৭ বিজিআই। এ সময় ক্লাস চলছিল, অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ভবনের মধ্যে অবস্থান করছিলেন।
‘গ্লোবাল সিকিউরিটি ডট কম’-এর তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনাকবলিত এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি চীনের চেংদু এয়ারক্রাফট কর্পোরেশনের তৈরি। এটি একক ইঞ্জিন ও দুই আসনবিশিষ্ট একটি প্রশিক্ষণ বিমান, যা সাধারণত সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহৃত হয়।
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটি ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। মাত্র ১২ মিনিট পরই বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। পাইলট বিমানটিকে ফাঁকা জায়গায় অবতরণের চেষ্টা করলেও শেষ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি স্কুল ভবনের ওপর ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয় এবং রাত গভীর পর্যন্ত তা চলে।
সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ আটকে আছে কি না তা নিশ্চিত হতে রাতভর কাজ চলে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
সারাদেশে এই দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অসংখ্য শিশু প্রাণ হারানোয় শুধু পরিবার নয়, গোটা জাতি শোকাহত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত এ নিয়ে শোক ও সমবেদনার ঢল নেমেছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক শোকবার্তায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রশিক্ষণের নিরাপত্তা এবং জনবহুল এলাকার আশেপাশে সামরিক বিমান চলাচলের ঝুঁকি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। এখন সময় এসেছে—নিরাপত্তা নীতি ও মানদণ্ড পুনর্মূল্যায়নের।
সবার প্রার্থনায় থাকুক আহত শিশুগুলো। থাকুক নিহতদের আত্মার মাগফিরাতের প্রার্থনা।
এই শোক যেন আমাদের সচেতনতা ও নিরাপত্তা উন্নয়নের অনুপ্রেরণা হয়।
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তর রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে গেছে এমিরেটসের একটি কার্গো উড়োজাহাজ। ফ্লাইট…
পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশনির বাসায় ছুরিকাঘাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন…
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাড়াহুড়োর…
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষণা করেছে যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলটি ‘শাপলা’ ও ‘শাপলায়’ প্রতীক…
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরগুনার আমতলী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় রূপ বানু (৬০) নামে এক বৃদ্ধা নিহত…
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিতব্য জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ…