তিন দিন আগে টানা বৃষ্টিপাত থেমে গেলেও এখনো পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ কাটেনি। এখনও প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা—জমিতে পানি জমে থাকায় তারা আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না।
জলাবদ্ধতার জন্য স্থানীয়রা দায়ী করছেন অবৈধভাবে খাল-জলাশয় ভরাট এবং কৃষিজমির নামে বন্দোবস্ত দেওয়া জমিগুলোতে বাড়িঘর ও পুকুর নির্মাণকে। এতে বিলের পানি বের হওয়ার স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে গেছে। স্লুইসগেট ব্যবস্থাপনাতেও রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সোনাতলা নদীর সেতু পেরিয়ে কুয়াকাটাগামী সড়কের ডানপাশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমি এখনো হাঁটু থেকে কোমর সমান পানির নিচে। মহিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী ফজলু গাজী জানান, “প্রায় সব খাল-জলাশয়ই দখলে চলে গেছে। কোথাও কেউ পুকুর করেছে, কোথাও বাড়ি। এতে করে পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষকরা চরম বিপাকে।”
ইউসুফপুর, নিজামপুর, সুধিরপুরসহ আশপাশের গ্রামের চিত্রও একই। চাষাবাদ তো দূরের কথা, অনেক স্কুল মাঠও ডুবে গেছে। মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা পারভিন জানান, “স্কুল মাঠ ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে, তবুও পানির নিচে চলে গেছে।”
মোয়াজ্জেমপুর ইউপি সদস্য জাকির হোসেন দুলাল জানান, “আমাদের এলাকায় দুটি স্লুইসগেট কাজ করছে, তাই কিছুটা পানি নেমেছে। তবে ইউসুফপুরে স্লুইসগেট সচল না থাকায় সেখানে পানি জমে আছে।”
ফতেহপুর গ্রামের অবস্থাও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কৃষকরা ধীরে ধীরে বীজতলা তৈরির চেষ্টা করছেন। তবে স্লুইসগেট ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণ থাকায় কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।
সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা টিয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামে। সেখানে শত শত বাড়ির উঠান ও ঘরের ভিতর পর্যন্ত পানি ঢুকে পড়েছে। নাচনাপাড়া বাজার থেকে পূর্ব দিকে বহমান খালটি দখল করে গড়ে উঠেছে একের পর এক স্থাপনা, যার ফলে পানি চলাচলের পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি নাচনাপাড়া চৌরাস্তার একমাত্র স্লুইসগেটটিও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বর্তমানে কলাপাড়ার ১২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার সরকারি খাল, বিল ও জলাশয় অবৈধ দখলে। এসব কারণে বৃষ্টির পানি বের হওয়ার কোনো পথ নেই, ফলে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি থেমে থাকলেও জলাবদ্ধতা কাটছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন জানান, “স্লুইসগেট সচল রাখতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। গতকাল রাতেও বাদুরতলী স্লুইস গেট খুলে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করেছি।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে এ বছর ১০-১২টি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। পৌরসভার খালগুলো থেকেও বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”
জলাবদ্ধতা সমস্যাটি কেবল প্রকৃতির নয়, এটি সম্পূর্ণভাবে একটি মানবসৃষ্ট দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। খাল-বিলের স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দিতে না পারলে ভবিষ্যতে চাষাবাদ ও জনজীবন আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাংলাদেশের ফুটবল সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত করার লক্ষ্য নিয়ে বিডিলীগ ডটকম আয়োজন করতে যাচ্ছে…
কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন কিংবা যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে চার্জার একটি অপরিহার্য সরঞ্জাম। আমরা যেমন…
সম্প্রতি গুগল তাদের Google Phone App-এ বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। বিশেষ করে ডায়ালপ্যাড, হোমপেজ ও…
বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যসংস্কৃতিতে মাছ ও মাংসের গুরুত্ব অপরিসীম। ভাতের সঙ্গে মাছ কিংবা মাংস – দুইটিই…
নিশ্ছিদ্র অবরোধে জর্জরিত গাজায় একরাশ রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। শুক্রবার (২৫ জুলাই) দিনভর চালানো…
সাম্প্রতিক এক যুগান্তকারী আবিষ্কারে সৌরজগতের প্রায় শেষ প্রান্তে, প্লুটোরও বহু দূরের এক রহস্যঘেরা অঞ্চলে, নতুন…