
আর্জেন্টাইন ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসির উপস্থিতি কেবল মাঠের খেলা নয়, পুরো জ্যামাইকার অর্থনীতির চিত্রই বদলে দিয়েছে! শুনতে আশ্চর্যজনক মনে হলেও দেশটির সরকারই এমন দাবি করেছে। কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের একটি ম্যাচে মেসির উপস্থিতি দেশটির পর্যটন, ব্যবসা, এবং আন্তর্জাতিক পরিচিতিতে অভূতপূর্ব প্রভাব ফেলেছে।
গত ১৪ মার্চ কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের ম্যাচে জ্যামাইকার ক্লাব ক্যাভালিয়ার এফসির মুখোমুখি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামি। কিংস্টনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে মেসি বেঞ্চে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমেই গোল করেন। তার খেলা দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল গ্যালারিতে।
জ্যামাইকার রাষ্ট্রীয় মন্ত্রী ডেলানো সিভারাইট জানিয়েছেন, এই ম্যাচ এবং বিশেষ করে মেসির উপস্থিতি দেশের অর্থনীতিতে অভাবনীয় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, “মেসির কারণে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দর্শকের ঢল নেমেছিল। এতে দেশের পর্যটন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, পরিবহন খাতসহ ছোটখাটো ব্যবসাগুলোও বিশাল লাভবান হয়েছে।”
সিভারাইট আরও বলেন, “বিশ্বের বড় সংবাদমাধ্যম এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর আলোচনার কেন্দ্রে ছিল জ্যামাইকা। মেসির উপস্থিতি আমাদের দেশকে নতুনভাবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।”
এই ম্যাচ উপলক্ষে শুধু জ্যামাইকার স্থানীয় দর্শকরাই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যটকরাও দেশটিতে ভিড় জমিয়েছিলেন। ফলে হোটেল, ফ্লাইট, রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে পর্যটন খাতের প্রতিটি অংশ সরাসরি লাভবান হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী জানান, তারা দীর্ঘদিন এমন ব্যবসায়িক উচ্ছ্বাস দেখেননি।
মেসির সফর শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, ফুটবলেও জ্যামাইকাকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। দলটি এখন সাবেক ইংল্যান্ড কোচ স্টিভ ম্যাকক্লারেনের অধীনে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জ্যামাইকা ফুটবল ফেডারেশন ইতোমধ্যে শক্তিশালী দল গঠনের পরিকল্পনা করেছে এবং শিগগিরই তারা সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড উইঙ্গার মেসন গ্রিনউডকে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে।
মেসির এই এক সফরই জ্যামাইকার জন্য অভূতপূর্ব সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। দেশটির ক্রীড়া ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা এখন আরও বড় বড় ইভেন্ট আয়োজনের স্বপ্ন দেখছে। তাদের আশা, ভবিষ্যতে আরও বড় তারকা ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে জ্যামাইকা বৈশ্বিক ক্রীড়াঙ্গনে নিজেদের উপস্থিতি আরও জোরালোভাবে জানান দেবে।
একজন ফুটবলারের উপস্থিতি যে একটি দেশের অর্থনীতি ও ফুটবল সংস্কৃতিতে এত বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে, লিওনেল মেসি তা আবারও প্রমাণ করলেন!