
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজামান কাফির বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের দুই নেতা শাহাদাত হাওলাদার (২২) ও মাহফুজ মোল্লা (২১) কে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (১১ মার্চ) বিকাল ৩টায় জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নুরুজামান কাফি তার ফেসবুক পেজে বিভিন্ন কন্টেন্ট তৈরি করতেন, যা কিছু মহলের অপছন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে কাফির বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা করে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা।
গ্রেফতারকৃত শাহাদাত হাওলাদারের বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামে এবং মাহফুজ মোল্লার বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব টিয়াখালী গ্রামে। তারা উভয়ই বরিশালের দুটি কলেজে অধ্যয়নরত।
পুলিশ জানায়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহাদাত ও মাহফুজ বরিশাল থেকে বাসযোগে আমতলীর বাদুরতলী এলাকায় আসেন। সেখানকার পূর্বপরিচিত একটি দোকান থেকে তারা পাঁচ লিটার ডিজেল কেনেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে করে তারা কাফির বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেন। পরে সুবিধাজনক সময় দেখে তারা ডিজেল ছিটিয়ে ঘরের চাল এবং রান্নাঘরে আগুন ধরিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। কলাপাড়া থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে।
এরপর রবিবার (১০ মার্চ) রাতে যৌথ অভিযানে বরিশাল থানা এলাকা থেকে শাহাদাত হাওলাদার এবং পটুয়াখালী সদর থানা এলাকা থেকে মাহফুজ মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ বলেন, “ঘটনায় জড়িত কেউই আইনের বাইরে থাকতে পারবে না। মূল অভিযুক্তদের পাশাপাশি যারা এ কাজে ইন্ধন জুগিয়েছে, অর্থ সরবরাহ করেছে বা অন্য কোনোভাবে সহায়তা করেছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, নুরুজামান কাফির সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা এই ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেছেন এবং অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন।