
লা লিগার গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল বেটিসের। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়েও কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে কার্লো অ্যানচেলত্তির দল। বল দখলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে ধার ছিল না ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও কিলিয়ান এমবাপেদের। ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে যাওয়ার পরও রক্ষণভাগের দুর্বলতায় শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের ব্যবধানে হারতে হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের।
শনিবার রাতে বেটিসের মাঠে শুরু থেকেই বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল রিয়ালের পায়ে। মাত্র ১০ মিনিটেই গোলের দেখা পায় তারা। ফারল্যান্ড মেন্ডির বাড়ানো বলে দুর্দান্ত এক ছোঁয়ায় গোল করেন ব্রাহিম দিয়াজ, এগিয়ে যায় অতিথিরা। কিন্তু এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি রিয়াল।
গোল হজমের পরই আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় স্বাগতিক বেটিস। একের পর এক আক্রমণে রিয়ালের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে তারা। অবশেষে ৩৪ মিনিটে কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন জনি কারদোসো, সমতায় ফেরে বেটিস। রিয়ালের রক্ষণভাগের দুর্বলতা তখনই স্পষ্ট হতে থাকে, যার খেসারত পরে দিতে হয় পুরো ম্যাচ জুড়েই।
বিরতির পরও আক্রমণের ধার বজায় রাখে বেটিস। ৬০ মিনিটের মাথায় রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগে অস্থিরতা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। স্বাগতিকদের স্প্যানিশ মিডফিল্ডার জেসুস রদ্রিগেজ রিয়ালের ডি-বক্সে ঢুকে পড়লে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন অ্যান্টনিও রুডিগার। এই ভুলের মাশুল দিতে হয় রিয়ালকে, কারণ রেফারি নির্দ্বিধায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ইসকো।
২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা এই স্প্যানিশ তারকা গোলের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও, ম্যাচ শেষে পুরনো ক্লাবের প্রতি সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন।
পিছিয়ে পড়ার পরও ম্যাচে ফেরার মতো কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি রিয়ালের খেলোয়াড়দের মধ্যে। কিলিয়ান এমবাপে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র কিংবা রদ্রিগো গোয়েস— কেউই রিয়ালের আক্রমণভাগে প্রাণ ফেরাতে পারেননি। ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা ব্রাজিলিয়ান তরুণ এন্ড্রিক ফেলিপে একটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু বক্সের ভেতরে ফাঁকা জায়গা পেয়েও তার শট লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন।
পুরো ম্যাচে রিয়ালের গোলের জন্য নেওয়া মাত্র ৯টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র ২টি, যেখানে বেটিসের ১৮ শটের ৩টি ছিল লক্ষ্যে। সংখ্যাগুলোই বলে দিচ্ছে, ম্যাচে রিয়ালের আক্রমণভাগ কতটা নিষ্প্রভ ছিল।
এই পরাজয়ের ফলে লিগ টেবিলে ধাক্কা খেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২৬ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ৫৪ পয়েন্ট, যা তাদের টেবিলের তিন নম্বরে নামিয়ে দিয়েছে। শীর্ষে থাকা অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের সংগ্রহ ৫৬ পয়েন্ট, আর সমান পয়েন্ট নিয়েও এক ম্যাচ কম খেলে বার্সেলোনা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
লা লিগার শিরোপা দৌড়ে টিকে থাকতে হলে দ্রুত নিজেদের পারফরম্যান্সে উন্নতি করতে হবে রিয়ালকে। কারণ এই ধরনের ছন্দহীন পারফরম্যান্স চলতে থাকলে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে লস ব্লাঙ্কোসদের জন্য।