দুই হাত প্রসারিত করে আত্মসমর্পণের ভঙ্গি। সেই বিখ্যাত পোস্টারের মতো, যেখানে লেখা ছিল ‘অ্যাবসোল্যুট সিনেমা’। বেনফিকার বিপক্ষে বার্সেলোনার এই ম্যাচ যেন সেই পোস্টারের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। কি ছিল না সেই নব্বই মিনিটে? উত্তেজনা, নাটকীয়তা, ভুলের পর ভুল আর অনন্যসাধারণ প্রত্যাবর্তনের গল্প। পুরো ম্যাচজুড়ে যেন এক অদম্য ঢেউ বয়ে গেছে, আর সেই ঢেউয়ের শেষে মাথা উঁচু করে মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা, নেতৃত্বে রাফিনহা।
প্রথমার্ধে ৩০ মিনিটেই ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল কাতালান জায়ান্টরা। সেখান থেকে তাদের ফেরার গল্পটা শুধু নাটকীয় নয়, একেবারে রূপকথার মতো। পুরো ম্যাচজুড়ে মাঠে যা ঘটেছে, তা যেন এক চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাতের শ্রেষ্ঠ রূপকথা।
ম্যাচের শুরুতেই বার্সার গোলরক্ষক সেজনির বড় এক ভুলে বেনফিকা এগিয়ে যায়। ওতামেন্ডির পাঠানো এক লং বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে অ্যালেক্স বালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সেজনির। এই সুযোগে ফাঁকা পোস্টে বল ঠেলে দেন ভ্যানগেলিস প্যাভলিদিস। কিন্তু এখানেই শেষ নয়!
কিছুক্ষণ পর সেজনি আরেকটি ভুল করে বেনফিকাকে পেনাল্টি উপহার দেন। সেই পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন প্যাভলিদিস। বার্সার ডিফেন্স যেন ভুলের মেলা বসিয়েছিল। তবুও, প্রথমার্ধের শেষ দিকে রাফিনহার এক দারুণ হেডার বার্সাকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। ট্রুবিনের ক্লিয়ারেন্স রাফিনহার মাথায় লেগে জালে জড়িয়ে যায়। এমন অপ্রত্যাশিত গোল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসেও বিরল।
৬৮ মিনিটের সময়েও বার্সেলোনা ৪-২ গোলে পিছিয়ে ছিল। প্যাভলিদিস ইতোমধ্যেই নিজের হ্যাটট্রিক সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু বার্সা থেমে থাকার দল নয়। এটাই তাদের পরিচয়।
রোনাল্ড আরাউহোর আত্মঘাতী গোল যেন ম্যাচকে আরও জমিয়ে দেয়। বার্সার সমর্থকদের হতাশার পালা তখনই শেষ হয়নি। কিন্তু ধীরে ধীরে ম্যাচের চিত্রপট বদলাতে থাকে। রাফিনহা, লেওয়ানডস্কি, এবং তোরেস মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে থাকেন।
শেষ দশ মিনিট যেন এক অসম্ভব রূপকথা। লেওয়ানডস্কি ও তোরেসের গোলে বার্সা সমতা ফেরায়। আর ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে রাফিনহার গোল পুরো নাটকের চূড়ান্ত অবতারণা করে। ২ বনাম ১ পরিস্থিতিতেও রাফিনহার শীতল মাথা ও নিখুঁত দক্ষতায় বল জালের ঠিকানা খুঁজে নেয়।
ম্যাচটি শুধু গোলের জন্যই নয়, ভুলের জন্যও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সেজনি, ওতামেন্ডি, আর আরাউহোর ভুলগুলো যেন এই ম্যাচের অনন্য অংশ। তবে রাফিনহার সেই হেডার, যা কোনোভাবেই পরিকল্পিত ছিল না, ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।
সব ভালো যার শেষ ভালো তার—এই প্রবাদবাক্য যেন বার্সেলোনার জন্যই লেখা হয়েছিল। ৫-৪ গোলের অবিশ্বাস্য জয় কেবল তিন পয়েন্টই নয়, আত্মবিশ্বাসের বিশাল এক ভান্ডারও এনে দিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই রাত কাতালান ক্লাবটির জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এমন জয় দলকে সামনে আরও এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাতের এই রূপকথা ভবিষ্যতে বার্সার এক মহাকাব্য হয়ে থাকবে।
লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকতে প্রতিটি ম্যাচেই এখন যুদ্ধ করতে হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে। প্রতিটি…
নিশ্চিতভাবেই ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে ফেরার পথে বিশাল এক পদক্ষেপ নিয়েছে কাতালান ক্লাব বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের…
বিশ্বজুড়ে যখন ফিলিস্তিন সংকট মানবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তখন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা জেলা থেকে উঠে এলো…
নিশ্চিতভাবেই ম্যাচের আগে অনুমান করা হয়েছিল, চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে শক্তিশালী ও অভিজ্ঞ রিয়াল মাদ্রিদের…
ফিফা র্যাংকিংয়ের পার্থক্য বিশাল—ভারত ১২৬, বাংলাদেশ ১৮৫। শক্তির বিচারে ফেভারিট ভারত, তাছাড়া খেলা ছিল ভারতেরই…
এক-দুই বছর নয়, পুরো ছয় বছর ধরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়হীন ব্রাজিল। ফুটবলের ইতিহাসের অন্যতম সফল…