ডালিম খাওয়া যেমন সুস্বাদু, তেমনি এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। শুধু ফলই নয়, এর খোসাও নানা স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। ডালিমের খোসা ব্যবহার করে তৈরি করা ডালিম চা পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যালকালয়েড এবং ট্রাইটারপেনেস সমৃদ্ধ, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রদাহরোধী এবং মূত্রবর্ধক গুণাবলীর জন্য পরিচিত। এই চা গলা ব্যথা, মাড়ির প্রদাহ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় উপকারী।
ডালিমের খোসা পেটের ফাঁপা, প্রদাহ, ডায়রিয়া, রক্তপাত কমাতে, হজম উন্নত করতে এবং লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এবং খাদ্য ও ওষুধে প্রিজারভেটিভ হিসেবে কার্যকর।
ডালিমের খোসার চায়ের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১. পুরনো কাশি ও কফ নিরাময়:
ডালিমের খোসার চা কাশি ও গলা ব্যথা উপশমে বিশেষ কার্যকর। এটি পুরনো কাশির সমস্যা কমাতে এবং গলা থেকে কফ বের করতে সাহায্য করে। গলা ব্যথা ও কাশি থেকে মুক্তি পেতে এই চা দিয়ে গার্গল করাও যেতে পারে।
২. কোলেস্টেরল কমায়:
ডালিম চা উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে এবং এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া আর্থ্রাইটিস ও গাউটের মতো সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধ:
গবেষণায় দেখা গেছে যে ডালিম চা স্তন, প্রোস্টেট এবং অন্ত্রের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
৪. ব্রণমুক্ত ত্বক:
ডালিমের খোসার অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যায় কার্যকর। ত্বক পরিষ্কার রাখতে এবং ডিটক্সিফিকেশনের জন্য ডালিমের খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক বা স্ক্রাব তৈরি করা যায়। খুশকি ও চুল পড়া রোধেও এটি সহায়ক।
৫. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ:
ডালিমের খোসার চা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, ডালিমের খোসার নির্যাস রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ডালিম চা প্রস্তুত প্রণালি:
ডালিম চা বানানো বেশ সহজ। এক কাপ পানিতে ১০ গ্রাম ডালিমের খোসা সেদ্ধ করুন। পাঁচ মিনিট সেদ্ধ হওয়ার পর আরও পাঁচ মিনিট ঢেকে রেখে দিন। দিনে দুই থেকে তিনবার এই চা পান করা যেতে পারে।
সতর্কতা:
ডালিম চা অতিরিক্ত পান করলে বমি বমি ভাব, বমি বা পেট জ্বালা হতে পারে। গুরুতর এলার্জি প্রতিক্রিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। দুই বছরের কম বয়সী শিশু, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলারা, পেটের আলসারে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ডালিমের প্রতি অ্যালার্জি আছে এমন কারও এই চা পান থেকে বিরত থাকা উচিত।