
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তর রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে গেছে এমিরেটসের একটি কার্গো উড়োজাহাজ। ফ্লাইট ইকে৯৭৮৮ দুবাই থেকে এসে স্থানীয় সময় রাত ৩টা ৫০ মিনিটে অবতরণের সময় একটি বিমানবন্দর নিরাপত্তা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে রানওয়ে ভেঙে সাগরে পড়ে।
দুজন নিহত গ্রাউন্ড স্টাফ
বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগ জানায়, সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা টহল যানটি সাগরে পড়ে যায়। উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত গিয়ে দুই গ্রাউন্ড স্টাফকে উদ্ধার করলেও পরে হাসপাতালে তারা মারা যান। মৃতদের বয়স যথাক্রমে ৩০ ও ৪১ বছর।
১৯৯৮ সালের পর দ্বিতীয় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা
১৯৯৮ সালে কাই টাক বিমানবন্দর থেকে চেক ল্যাপ ককে স্থানান্তরের পর এটি হংকং বিমানবন্দরের দ্বিতীয় বড় দুর্ঘটনা। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে টাইফুনের সময় চায়না এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল।
নতুন উত্তর রানওয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ
দুর্ঘটনার পর তুলনামূলক নতুন উত্তর রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ রানওয়ে সচল থাকার কারণে বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে।
বিস্তারিত জানালেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক
বিমানবন্দরের অপারেশন্স বিভাগের নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন ইয়ু সিউ-চাং জানান, অবতরণের সময় আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল এবং অন্য ফ্লাইটের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। নিহত গ্রাউন্ড স্টাফদের একজনের ৭ বছরের এবং অন্যজনের ১২ বছরের অভিজ্ঞতা ছিল।
তিনি আরও বলেন, “উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে বেড়া ভেঙে ফেলে এবং দুর্ভাগ্যবশত সেখানে থাকা একটি নিরাপত্তা টহল গাড়িকে ধাক্কা দেয়, যা সাগরে পড়ে যায়।”
দ্রুত উদ্ধার অভিযান
উড়োজাহাজে থাকা চারজন এমিরেটস ক্রু নিজেরাই জরুরি দরজা খুলে বের হন এবং তারা সবাই নিরাপদ আছেন। ঘটনাস্থলে দুই মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যায় ফায়ার সার্ভিস। উড়োজাহাজটি দুই ভাগে ভেঙে পানিতে ভাসতে দেখা যায়। মোট ২১৩ জন দমকল ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৪৫টি উদ্ধারযান কাজে অংশ নেয়।
তদন্ত চলছে, খোঁজা হচ্ছে ব্ল্যাক বক্স
হংকং এয়ার অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন অথরিটি জানিয়েছে, সাগরে ব্ল্যাক বক্স—ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার—খোঁজা হচ্ছে। তদন্তের গতি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হওয়ার ওপর নির্ভর করবে।
৩০ বছরের পুরনো বদলে যাওয়া উড়োজাহাজ
দুর্ঘটনাকবলিত বোয়িং ৭৪৭-৪৮১ (BDSF) বিমানটি প্রথম আকাশে ওড়েছিল ১৯৯৩ সালে। এটি একসময় যাত্রীবাহী বিমান ছিল, পরে রূপান্তরিত হয় কার্গো উড়োজাহাজে। এটি অতীতে এএনএ, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সসহ বিভিন্ন এয়ারলাইনের অধীনে ব্যবহৃত হয়েছে।
এমিরেটসের বিবৃতি
এমিরেটস জানায়, ফ্লাইটটি এয়ার এসিটি থেকে ‘ওয়েট লিজ’ পদ্ধতিতে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল এবং বিমানে কোনো মালামাল ছিল না। সব ক্রু নিরাপদ আছেন।
ফ্লাইটরাডার২৪ তথ্য অনুযায়ী, এয়ার এসিটি বহরে এরকম আরেকটি বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ রয়েছে।