
দীর্ঘ দেড় বছরের বিরতি কাটিয়ে আবারও ব্রাজিল জাতীয় দলে ফিরছেন সুপারস্টার ফরোয়ার্ড নেইমার। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আসন্ন কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছেন কোচ দোরিভাল জুনিয়র।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করে। এ ঘোষণার সময় নেইমার নিজেও টিভির সামনে ছিলেন, আশায় বুক বেঁধেছিলেন দলে ফেরার সুখবর শোনার জন্য।
নেইমারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে, উরুগুয়ের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে গুরুতর হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন তিনি, যা তাকে দীর্ঘদিনের জন্য মাঠের বাইরে ঠেলে দেয়। অস্ত্রোপচার ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার দীর্ঘ ধাপে এগিয়ে এসে এবার ব্রাজিলের জার্সিতে মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
বর্তমানে ব্রাজিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ১৮ রাউন্ডের মধ্যে ১২ ম্যাচ শেষে তারা ১০ দলের গ্রুপে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। যদিও শীর্ষ ছয়টি দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে, তবে ব্রাজিলের এখনো নিশ্চিন্ত থাকার মতো অবস্থা নয়। সপ্তম স্থানে থাকা বলিভিয়ার চেয়ে তারা মাত্র পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে আছে, অন্যদিকে শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের চেয়ে ৭ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।
নেইমারের প্রত্যাবর্তন দলকে নতুন উদ্দীপনা দিতে পারে বলে মনে করছেন কোচ দোরিভাল জুনিয়র। তিনি বলেন, “নেইমার নিজের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পাওয়ার পথে রয়েছে। আমরা সবাই জানি ও বুঝতে পারি যে, তার সামর্থ্য ও প্রতিভা দিয়ে সে মাঠে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা তার ফেরার অপেক্ষায় ছিলাম, এবং অবশেষে সেই সুযোগ এসেছে। আশা করি, দলে ফিরে সে আনন্দিত হবে। আমরা তাকে আত্মবিশ্বাস ও স্বস্তি দিতে চাই। তবে আমাদের উচিত হবে না তার ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করা। তাকে তার স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার সময় দিতে হবে।”
১২৮ ম্যাচে রেকর্ড ৭৯ গোল করা নেইমার আগেই জানিয়েছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার দৃঢ় ইচ্ছা তার আছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসরে ব্রাজিলের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
ব্রাজিলের ২৩ সদস্যের স্কোয়াড (আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে)
গোলরক্ষক:
- অ্যালিসন (লিভারপুল)
- এডারসন (ম্যানচেস্টার সিটি)
- বেন্তো (আতলেতিকো পারানেনসে)
রক্ষণভাগ:
- ভেন্দারসন (মোনাকো)
- ওয়েসলি (ফ্লামেঙ্গো)
- লিও ওর্টিজ (রেড বুল ব্রাগানতিনো)
- দানিলো (জুভেন্টাস)
- গ্যাব্রিয়েল মাগালহাস (আর্সেনাল)
- মারকুইনহোস (পিএসজি)
- মুরিলো (নটিংহ্যাম ফরেস্ট)
- গিলের্মে আরানা (আতলেতিকো মিনেইরো)
মধ্যমাঠ:
- আন্দ্রে (ফ্লুমিনেন্স)
- ব্রুনো গুইমারায়েস (নিউক্যাসল ইউনাইটেড)
- গারসন (ফ্লামেঙ্গো)
- জোয়েলিনটন (নিউক্যাসল ইউনাইটেড)
আক্রমণভাগ:
- নেইমার (আল-হিলাল)
- এসতোভো (পালমেইরাস)
- জোয়াও পেদ্রো (ব্রাইটন)
- রাফিনহা (বার্সেলোনা)
- রদ্রিগো (রিয়াল মাদ্রিদ)
- ভিনিসিউস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ)
- সাভিনহো (জিরোনা)
- ম্যাথিউস কুনহা (উলভস)
নেইমারের ফেরা ব্রাজিলের জন্য কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলপ্রেমীরা আশা করছেন, তাদের তারকা খেলোয়াড় ফিরেই জ্বলে উঠবেন এবং দলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।