
বরগুনার বেতাগীতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যানারে নাম না দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ূন কবির ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহজাহান কবির ও তাঁর ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শোয়েব কবিরের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে।
বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে মঙ্গলবার ছিল বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির। পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে সেখানে উপস্থিত হন শাহজাহান কবিরের ছেলে শোয়েব কবির।
অনুষ্ঠানের ব্যানারে তাঁর বাবার নাম না দেখে শোয়েব ক্ষুব্ধ হয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উচ্চবাচ্য শুরু করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে খবর পেয়ে শাহজাহান কবির তাঁর সমর্থকদের নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন এবং একাধিক কক্ষে ভাঙচুর চালান।
এ ঘটনার পরপরই হুমায়ূন কবিরের সমর্থকরাও সেখানে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শোয়েব কবির, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল খানসহ অন্তত আটজন আহত হন। জামাল খানকে গুরুতর অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহিন বলেন, “শাহজাহান কবিরকে দাওয়াত কার্ড দিয়ে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে বর্তমানে তিনি কোনো দলীয় পদে নেই, তাই ব্যানারে তাঁর নাম রাখা হয়নি। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়েই তিনি ও তাঁর ছেলে উত্তেজিত হয়ে কলেজে হামলা চালিয়েছেন।”
হুমায়ুন কবিরও একই অভিযোগ করে বলেন, “শাহজাহান কবির ও তাঁর ছেলে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এতে আমি এবং আমার দলের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছি। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি।”
তবে শাহজাহান কবির পাল্টা দাবি করে বলেন, “আমার ছেলে শোয়েব শুধুমাত্র অধ্যক্ষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিল। সেখানে হুমায়ুন কবিরের সমর্থকরা উপস্থিত হয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। আমার ছেলের মাথায় আঘাত লাগে, এরপর পোলাপানও পাল্টা মারধর করে। এখন মিটমাট হয়ে গেছে।”
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “আমরা ঘটনাটি শুনেছি। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পর থেকে বেতাগী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে প্রশাসন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তৎপর রয়েছে।