
লা লিগার উত্তেজনা তুঙ্গে! রিয়াল মাদ্রিদ এবং আতলেতিকো মাদ্রিদ মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিল, শুধু নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকভাবে সারতে হতো বার্সেলোনাকে। আর সেটাই দারুণভাবে করেছে হান্সি ফ্লিকের দল। গতকাল রাতে রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয়ে লিগের শীর্ষে উঠেছে কাতালানরা।
শুধুমাত্র জয়ই নয়, লা লিগার শিরোপার লড়াইটাও আরও জমিয়ে তুলেছে বার্সেলোনা। রবার্ট লেভানদোভস্কির একমাত্র গোলেই এসেছে গুরুত্বপূর্ণ এই জয়। ম্যাচের ২৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন পোলিশ তারকা, যা শেষ পর্যন্ত নির্ধারক হয়ে দাঁড়ায়।
শনিবার রাতে দুই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদ নিজেদের ম্যাচে পয়েন্ট হারায়। ফলে বার্সার সামনে সুযোগ আসে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার। ভায়েকানোর বিপক্ষে ম্যাচ সহজ ছিল না। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ শুরু থেকেই কঠিন পরীক্ষা নেয় বার্সার আক্রমণভাগের। তবে সুযোগ তৈরি করতে ছিল বার্সার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা।
প্রথমার্ধের ২৬ মিনিটে পেনাল্টির সুযোগ আসে বার্সার সামনে, যা লেভানদোভস্কি নিশ্চিতভাবে গোলে পরিণত করেন। তবে গোলের পরও ভায়েকানো একাধিকবার ম্যাচে ফিরতে চেষ্টা করেছে। একবার তো প্রায় সমতা ফেরানোর মতোও হয়েছিল, কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয় তাদের গোল। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে দু’দলই গোলের জন্য চেষ্টা চালালেও আর কোনো গোলের দেখা মেলেনি।
২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১২টি ম্যাচ খেলে অপরাজিত রয়েছে বার্সেলোনা। তিন সপ্তাহ আগেও রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা কাতালানরা এখন উঠে এসেছে সমান পয়েন্টে। ২৪ ম্যাচ শেষে বার্সা ও রিয়াল মাদ্রিদ দু’দলেরই পয়েন্ট ৫১, তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে বার্সা। যেখানে রিয়ালের গোল ব্যবধান +২৯, সেখানে বার্সার গোল ব্যবধান +৪০।
এই কষ্টার্জিত জয় নিয়ে বার্সার কোচ হান্সি ফ্লিক সন্তুষ্ট হলেও সতর্কও থাকছেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “খেলোয়াড়দের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা আনন্দিত। আমাদের নতুন অবস্থান নিয়ে সবাই খুশি। আমার মনে হয়, আমরা খুব ভালো খেলেছি, যদিও আমার ধারণা, আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম।”
শীর্ষে ওঠার আনন্দ থাকলেও ফ্লিক মনে করিয়ে দিলেন, এই অবস্থান ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। “এটা অনেক লম্বা রাস্তা। আমরা ভক্তদের জন্য খুবই খুশি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। শীর্ষে ওঠার বিষয়টা কোনো অর্থ বহন করবে না যদি আমরা এই লড়াই অব্যাহত না রাখি।”
এই জয়ের ফলে লা লিগার শিরোপা লড়াই আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ এবং জিরোনা—এই তিন দলই শীর্ষস্থান দখলের দৌড়ে রয়েছে। মৌসুমের বাকি সময়টাতে আরও জমজমাট লড়াই দেখা যাবে বলেই মনে হচ্ছে।
বার্সার সামনে এখন প্রধান লক্ষ্য হবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। প্রতিদ্বন্দ্বীদের পয়েন্ট খোয়ানোর সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের দিকে এগিয়ে যেতে চাইবে কাতালানরা। হান্সি ফ্লিকের দল কি পারবে এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে? সেটাই এখন দেখার বিষয়!