
এফএ কাপে অঘটনের শিকার লিভারপুল, ইতিহাস গড়ল প্লাইমাউথ
দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলার মাঝেই মৌসুমের দ্বিতীয়ভাগে এসে বড় ধাক্কা খেল লিভারপুল। দ্বিতীয় স্তরের ক্লাব প্লাইমাউথ আর্গাইলের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক পরাজয়ের স্বাদ নিয়ে এফএ কাপ থেকে ছিটকে গেল আর্নে স্লটের দল। ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাসে এটি আরও একটি স্মরণীয় অঘটন হয়ে রইল, যেখানে এক নিম্নদলের কাছে মাথা নত করল প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ দল।
মাত্র দুই দিন আগেই লিগ কাপের সেমিফাইনালে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় লিভারপুল। সেই উচ্ছ্বাসের রেশ কাটতে না কাটতেই একেবারে বিপরীত এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হলো রেডসদের। ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর—লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রায় তলানির দল প্লাইমাউথের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ড থেকেই বিদায় নিল তারা।
টটেনহ্যামের বিপক্ষে বড় জয়ের পর এফএ কাপের এই ম্যাচে লিভারপুল কোচ আর্নে স্লট তার একাদশে ১০টি পরিবর্তন আনেন। তরুণদের সঙ্গে কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের মিশ্রণে সাজানো দল নিয়ে মাঠে নামে রেডসরা।
বল দখলের লড়াইয়ে লিভারপুল একচেটিয়া আধিপত্য দেখালেও, গোলের সামনে গিয়ে কার্যকর কিছু করতে ব্যর্থ হয় তারা। প্রচুর শট নেওয়া সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা দলটি। অন্যদিকে, ধৈর্য ধরে খেলতে থাকা প্লাইমাউথ সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এবং সেটাই কাজে লাগিয়ে ইতিহাস গড়ল।
দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট তৈরি হয়। লিভারপুলের তরুণ মিডফিল্ডার হার্ভি এলিয়টের হাতে বল লাগলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে স্কটিশ ফরোয়ার্ড রায়ান হার্ডি নিখুঁত শটে বল জালে পাঠিয়ে প্লাইমাউথকে অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়ে দেন।
এরপরও সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকরা। কয়েক মিনিট পর হার্ডি আরও একবার লিভারপুলের রক্ষণ ভেদ করে গোলের সম্ভাবনা জাগান, তবে গোলরক্ষক কুইভিন কেলেহারের দুর্দান্ত সেভ এবং পোস্টে লেগে ফিরে আসা বলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় অতিথিরা।
গোল হজমের পর লিভারপুল আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং একের পর এক সুযোগ তৈরি করে। শেষ দিকে দিয়োগো জটার দারুণ এক শট নেন, কিন্তু প্লাইমাউথের গোলরক্ষক কনর হ্যাজার্ড অনবদ্য দক্ষতায় তা ঠেকিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর দারউইন নুনেসের হেডও তিনি অবিশ্বাস্যভাবে রুখে দিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
হাজারো দর্শকের সামনে হোম পার্কে গড়ল এক স্মরণীয় মুহূর্ত। প্লাইমাউথের ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয়ের সাক্ষী হলো ফুটবলবিশ্ব, আর লিভারপুলের জন্য এটি রইল এক তিক্ত স্মৃতি হিসেবে।