এস্পানিওলের চমক: রিয়াল মাদ্রিদকে শেষ মুহূর্তে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়
লা লিগায় শনিবার রাতে এক চমকপ্রদ ম্যাচের সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব। অবনমন অঞ্চলের দল এস্পানিওল শেষ মুহূর্তের নাটকীয় গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে চমকে দিল। আরসিডিই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে কার্লোস রোমেরোর জয়সূচক গোলে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নেয় কাতালান ক্লাবটি, যা তাদের জন্য হতে পারে মৌসুমের টার্নিং পয়েন্ট।
ম্যাচের শুরু থেকেই উভয় দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে, তবে স্পষ্ট গোলের সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছিল। রিয়ালের তারকা ফরোয়ার্ডরা একের পর এক আক্রমণ শানালেও এস্পানিওলের রক্ষণ ছিল অবিচল।
২২তম মিনিটে রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র বল জালে পাঠালেও রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। এমবাপের একটি ট্যাকলে এস্পানিওলের মিডফিল্ডার পল লোসানো বক্সে পড়ে গেলে রেফারি গোলটি বাতিল করেন।
প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হলেও ম্যাচে উত্তেজনার কমতি ছিল না। দু’দলই একে অপরের রক্ষণভাগকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছিল, তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে কেউই সফল হতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বড় এক ধাক্কা খায় রিয়াল মাদ্রিদ। ৫০তম মিনিটে পায়ে অস্বস্তি অনুভব করায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন দলের অভিজ্ঞ জার্মান ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার। তার বদলি হিসেবে নামেন তরুণ ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিও।
রিয়ালের আক্রমণ বাড়তে থাকে, কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। ৭৬তম মিনিটে কাছ থেকে নেওয়া রদ্রিগোর শট গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে ফিরে আসে। পরের মিনিটেই এমবাপে সুযোগ পেলেও এস্পানিওলের গোলরক্ষক দুর্দান্ত সেভ করে দলকে রক্ষা করেন।
অন্যদিকে, ৮০তম মিনিটে এস্পানিওলের ফরোয়ার্ড কারেরাস নিচু শটে গোলের চেষ্টা করেন, কিন্তু থিবো কোর্তোয়া অসাধারণ দক্ষতায় তা ঠেকিয়ে দেন।
৮৫তম মিনিটে ঘটে ম্যাচের সবচেয়ে বড় ঘটনা। এস্পানিওলের এক দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণে রিয়ালের রক্ষণ ভেঙে পড়ে। সতীর্থের ক্রস থেকে ছয় গজ বক্সের কোণা থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে বল জালে পাঠান কার্লোস রোমেরো। তার অসাধারণ গোলেই এস্পানিওল এগিয়ে যায় ১-০ ব্যবধানে।
রিয়াল শেষ পাঁচ মিনিটে মরিয়া হয়ে গোলের জন্য চেষ্টা চালায়। এমবাপে, রদ্রিগো ও ভিনিসিয়ুস একের পর এক আক্রমণ করেন, কিন্তু এস্পানিওলের রক্ষণ ও গোলরক্ষক রিয়ালকে কোনো সুযোগই দেয়নি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের চূড়ান্ত বাঁশি বাজতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে এস্পানিওল শিবির।
এই জয়ের ফলে এস্পানিওল অবনমন অঞ্চলের বাইরে উঠে এসেছে। ২২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন ১৭তম স্থানে রয়েছে।
অন্যদিকে, শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ ২২ ম্যাচে ১৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকলেও আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারিয়েছে। আতলেতিকো ২২ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে।
তৃতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনা ২১ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা দৌড়ে পিছিয়ে আছে। তবে রিয়াল ও আতলেতিকোর মধ্যে লড়াই আরও জমে উঠবে, কারণ আগামী শনিবার সান্তিয়াগো বার্নাবেউয়ে মুখোমুখি হবে এই দুই মাদ্রিদ ক্লাব।
লা লিগার এই ম্যাচ প্রমাণ করল, ফুটবলে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটতে পারে যে কোনো সময়। শক্তিশালী রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে এস্পানিওল দেখিয়ে দিল, কেন ফুটবলকে বলা হয় অনিশ্চয়তার খেলা। এই জয় এস্পানিওলের জন্য যেমন আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর, তেমনি রিয়াল মাদ্রিদের জন্য সতর্কবার্তা—এক মুহূর্তের অসতর্কতাই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে!
লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকতে প্রতিটি ম্যাচেই এখন যুদ্ধ করতে হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে। প্রতিটি…
নিশ্চিতভাবেই ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে ফেরার পথে বিশাল এক পদক্ষেপ নিয়েছে কাতালান ক্লাব বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের…
বিশ্বজুড়ে যখন ফিলিস্তিন সংকট মানবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তখন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা জেলা থেকে উঠে এলো…
নিশ্চিতভাবেই ম্যাচের আগে অনুমান করা হয়েছিল, চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে শক্তিশালী ও অভিজ্ঞ রিয়াল মাদ্রিদের…
ফিফা র্যাংকিংয়ের পার্থক্য বিশাল—ভারত ১২৬, বাংলাদেশ ১৮৫। শক্তির বিচারে ফেভারিট ভারত, তাছাড়া খেলা ছিল ভারতেরই…
এক-দুই বছর নয়, পুরো ছয় বছর ধরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়হীন ব্রাজিল। ফুটবলের ইতিহাসের অন্যতম সফল…