ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের শুরুটা একেবারেই হতাশাজনক ছিল। মাত্র ১ মিনিটের মাথায় গোল হজম করে বসে তারা। ম্যাচের শুরুতেই ডান দিক থেকে সান্দ্রো রামিরেসের নিখুঁত পাসে অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে ছয় গজ বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠান লাস পালমাসের ফাবিও সিলভা। গোল হজমের পর রিয়ালের খেলায় কিছুটা অগোছালো ভাব দেখা যায়।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ছন্দ ফিরে পায় কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। একের পর এক আক্রমণে চেপে ধরে প্রতিপক্ষকে। যদিও প্রথম গোলের সুযোগটি হাতছাড়া করেন ব্রাহিম দিয়াজ। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে বাঁ দিক থেকে রদ্রিগো গোজের দারুণ পাস ছয় গজ বক্সে ফাঁকা অবস্থায় পেয়েও গোলপোস্টের বাইরে মেরে বসেন তিনি।
তবে গোলের জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি রিয়াল মাদ্রিদকে। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বক্সে রদ্রিগো ফাউলের শিকার হলে রিয়াল পেনাল্টি পায়। স্পট-কিক থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গোল করে দলকে সমতায় ফেরান ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। এরপর থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় রিয়াল।
৩৩ মিনিটে রিয়ালের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন ব্রাহিম দিয়াজ। বক্সের বাইরে থেকে এমবাপ্পের নেয়া শট লাস পালমাসের গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বল রিবাউন্ড হয়ে যায় লুকাস ভাসকেজের কাছে। সেখান থেকে ভাসকেজের নিখুঁত পাস পেয়ে স্লাইড শটে ফাঁকা জালে বল পাঠান ব্রাহিম।
এর মাত্র তিন মিনিট পরই ব্যবধান বাড়িয়ে দেন এমবাপ্পে। পালমাসের ডিফেন্সের ভুলের সুযোগ নিয়ে আক্রমণে ওঠে রিয়াল। রদ্রিগোর পাসে বল পেয়ে ডান পায়ের নিখুঁত শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এমবাপ্পে।
৪২ মিনিটে হ্যাটট্রিকের খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন এমবাপ্পে। বক্সে দুর্দান্ত শট নিয়ে গোল করলেও ভিএআর রিভিউতে সেই গোলটি বাতিল হয় অফসাইডের কারণে।
বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে মাঠে নামে রিয়াল। ৫৩ মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন রদ্রিগো। বক্সের মধ্যে ফ্রান গার্সিয়ার পাস পেয়ে ডান পায়ের শটে জাল কাঁপান ব্রাজিলিয়ান এই উইঙ্গার।
৬৪ মিনিটে আরও বিপদে পড়ে লাস পালমাস। রিয়ালের লুকাস ভাসকেজকে বাজেভাবে ফাউল করায় সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ডিফেন্ডার বেনিতো রামিরেস। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া পালমাস এরপর আর কোনোভাবে ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায়নি।
রিয়াল যদিও বেশ কিছুবার আক্রমণ করে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ায়, কিন্তু সেগুলো অফসাইডের কারণে বাতিল হয়।
শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ের মাধ্যমে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে কার্লো আনচেলত্তির দল। কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলের পাশাপাশি ব্রাহিম দিয়াজ ও রদ্রিগোর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স রিয়ালের জয়ের পথ সহজ করে দেয়।
প্রতিপক্ষের চমকপ্রদ শুরুর পরও নিজেদের সেরা ফুটবল উপহার দিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। দলের এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স শিরোপার দৌড়ে তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তুলবে।