দীর্ঘ ১২ বছর পর ফিরে এলেন শৈশবের ক্লাব সান্তোসে। ভক্তদের আবেগ, মাঠের উন্মাদনা আর এক নস্টালজিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এক উজ্জ্বল অধ্যায়। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সান্তোসের ঐতিহাসিক ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে বোতাফোগোর বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো অভিষেক হলো নেইমারের। আর প্রত্যাবর্তনের এই ম্যাচেই নিজের ফুটবল জাদু ছড়িয়ে জিতে নিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

চোট কাটিয়ে ধীরে ধীরে ফিটনেস ফিরে পাওয়ার পথে আছেন নেইমার। তাই ম্যাচের শুরু থেকেই একাদশে ছিলেন না। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গ্যাব্রিয়েল বোনতেম্পোর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। নেইমারের মাঠে নামার মুহূর্তটি ছিল আবেগঘন। স্টেডিয়ামের দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান তাদের প্রিয় তারকাকে।
মাঠে নেমেই নিজের উপস্থিতির জানান দেন নেইমার। বলের নিয়ন্ত্রণ, চতুর পাস আর গতিময় ড্রিবলে বোতাফোগোর রক্ষণভাগকে চাপে রাখেন তিনি। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও ভাগ্যের সহায়তা পাননি। তবে তার খেলায় ছিল আত্মবিশ্বাস, যা সান্তোস ভক্তদের নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
নেইমার মাঠে নামার সময় ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল সান্তোস। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে বোতাফোগো গোল করে সমতা ফেরায়, ফলে ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে জয় না পেলেও নেইমারের পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত সান্তোস সমর্থকরা।
ম্যাচ শেষে নেইমার তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘সান্তোসকে আমি হৃদয় থেকে ভালোবাসি। আজকের রাতের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত।’
চোটের কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন নেইমার। এখনো শতভাগ ফিট হয়ে উঠতে পারেননি। তাই মাঠে নেমে নিজেকে সংযত রেখেছিলেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘শারীরিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত হতে আরও কিছু ম্যাচ লাগবে। আজকে খুব বেশি দৌড়ানোর চেষ্টা করিনি, বেশি ড্রিবলও করিনি। আশা করি, চার-পাঁচ ম্যাচের মধ্যেই নিজের সেরা ফর্মে ফিরতে পারবো।’
২০১৩ সালে সান্তোস থেকে ইউরোপের পরাশক্তি বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নেইমার। সেখানে মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে গড়ে তুলেছিলেন ভয়ংকর আক্রমণত্রয়ী (এমএসএন), জিতেছিলেন একাধিক শিরোপা। ২০১৭ সালে দলবদলের ইতিহাসে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে যোগ দেন তিনি। পরে সৌদি প্রো লিগের আল-হিলালের জার্সি গায়ে চাপান।
এত দীর্ঘ পথ ঘুরে আবারও শৈশবের ভালোবাসার ক্লাব সান্তোসে ফিরে আসা নিঃসন্দেহে একটি আবেগঘন মুহূর্ত। নতুন করে ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত ব্রাজিলিয়ান এই মহাতারকা। তার প্রত্যাবর্তনে সান্তোস ভক্তরা স্বপ্ন দেখছে, হয়তো একদিন নেইমারের নেতৃত্বেই দল ফিরে পাবে তাদের হারানো গৌরব।